শঙ্কর মণ্ডল: দীর্ঘদিন চুপচাপ! কোনও কথা বলতে দেখা গেল না। হিংসার চরম নিদর্শন প্রতিষ্ঠিত হল। সারা দেশ শুধু নয় পাকিস্তানেও এই বাংলার পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সেখানকার টিভি চ্যানেল ও প্রিন্ট মিডিয়াতেও আলোচনা হচ্ছে। অন্যান্য দেশে তো বটেই, ৬১ হাজার বুথে কোনওভাবেই সংবাদ মাধ্যমের পৌঁছানো সম্ভব নয়। তাই পুরো রাজ্যের হিংসা দেখানো যায়নি। মৃত্যুর মিছিল দেখা যাচ্ছে। সব জায়গায় প্রতিরোধ গড়াও সম্ভব ছিল না। তাই নীরবতা ভেঙে বাংলার সবচেয়ে বড় লুম্পেন চোর ক্যামেরার সামনে এসে হাজির। আবার পাক্কা চিটিংবাজের মতো বড় বড় কথার ফুলঝুরি ঝরাচ্ছেন। দুর্ভাগ্য আমাদের, সংবাদ মাধ্যমে এই মিথ্যা ভাষণ পরিবেশন করা হচ্ছে। সেখানে প্রচ্ছন্ন হুমকিও ওর ভাষণে আছে। ও বলছে যে, বাংলায় গণতন্ত্র আছে বলে রবিশঙ্কর প্রসাদ গ্রামে গ্রামে ঘুরতে পারছেন। এমনকি সংবাদ মাধ্যমও মমতা ব্যানার্জী বা তৃণমূলের বিরুদ্ধে খবর প্রচার করতে পারছে এই রাজ্যে গণতন্ত্র আছে বলে। সুতরাং এই বক্তব্যটাই একটা হুমকি।
যাই হোক, আজ উনি এই সন্ত্রাসের জন্য বিজেপিকে দায়ী করছেন। বিচার ব্যবস্থাকেও কাঠগড়ায় তুলছে। এত ঔদ্ধত্য! কিন্তু আমি যদি ধরেই নিই এই সব গুণ্ডামী বিজেপি করেছে, সিপিএম কংগ্রেস আইএসএফ ওদের বি টিম, তাই ওদের কথা বাদই দিলাম। কিন্তু ওর পিসির পুলিশ কি করছে? পুলিশ কেন তার গোয়েন্দা দফতরের মাধ্যমে বিজেপির এই গুণ্ডাদের বা বেআইনি অস্ত্রের তালিকা সংগ্রহ করতে পারে নি? পুলিশে এই রাজ্যের ৭০ শতাংশ অপরাধ রেজিষ্টার করা হয় না। এটা যেকোনও সময় প্রমাণ চাইলে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করতে পারেন।
আজকে ওদের পুলিশ বেআইনি নিয়োগ থেকে শুরু করে, গরু, বালি সহ সমস্ত বেআইনি কাজের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত। আজ সমস্ত ক্ষেত্রে জালি কাজ দেখা যাচ্ছে। তা সে আবাস যোজনা হোক, ১০০ দিনের কাজ হোক, মিড ডে মিলের টাকা হোক, সর্বত্র এক কথায় এই রাজ্যটায় একটা জঙ্গলের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। এখানে কোনও সুস্থ রাজনৈতিক আলোচনার পরিবেশ নেই। শাসকদল যেহেতু একটা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী, সেহেতু এই দলে প্রায় সবাই একটা কর্মচারী। তাই এই কর্মচারীরা বিশেষ করে অত্যন্ত জঘণ্য ভাবমূর্তি থাকা কুণাল ঘোষ বা স্কোয়ার ফিট ডাক্তার বা মাতাল মদন, সমস্ত শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করে বাজে কথা তো বলছেনই, এমনকি মহামহিম রাজ্যপাল ও বিচারকদেরকেও আক্রমণ করতে ছাড়ছে না সেটাই তো স্বাভাবিক।
তবে আবারও বলব, বিজেপি-র এখনও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। সাংগঠনিক কাজ ও আন্দোলনের ফাঁকফোকড় পূরণ করা। তা না হলে ভবিষ্যতে এই একতরফা সুযোগ থাকবে না। নতুন কোনও শক্তি তৈরি হতেও পারে। সিপিএম, কংগ্রেসের মুখোশ খুলে দেওয়ার জন্য জোরালো প্রচার অত্যাবশ্যক। কারণ, এই শক্তিও তৃণমূলের পরাজয়ের জন্য অন্যতম বড় বাধা হয়ে উঠতে পারে। সিপিএমের সঙ্গে অনেক বেশি কর্মঠ কর্মী আছে। সেটা মাথায় রাখতে হবে।
আর একটি বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে, সেটা হল আইএসএফকে নিয়ে। এর পেছনে অন্য অনেক দুশ্চিন্তা আছে। ইতিমধ্যেই গোষ্ঠী সংঘর্ষ। যেটা হবে না ভেবেছিলাম, সেটা দক্ষিণ ২৪ পরগণা সহ কিছু জায়গায় শুরু হয়েছে। ইঙ্গিতটা স্পষ্ট।সুতরাং এখানেও যোগী আদিত্যনাথের মতো একজন দরকার। আর এনকাউন্টার? এটাই দরকার, অবশ্যই অব দ্য রেকর্ড।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ লেখক সংযুক্ত হিন্দুফ্রন্টের সভাপতি। এই প্রবন্ধে সমস্ত মতামত তাঁর ব্যক্তিগত।
previous post