জলপাইগুড়ি: ৫১৫ বছরের পুরনো ঐতিহ্য বজায় রেখে এবারও রাজবাড়িতে অনুষ্ঠিত হল মনসা পুজো। আভিজাত্যের ছাপ থাকা এই পূজোয় ছিল বিশেষ ভোগ—চিতল, বোয়াল, ইলিশ, চিংড়ি আর কাতলা মাছের পদ, সঙ্গে পোলাও।
শুধু ভোগ নয়, এদিন ছিল কাদা খেলারও দিন। জন্মাষ্টমীর পরের দিন রাজবাড়িতে আয়োজিত হয় দধি কাদো উৎসব। প্রথমে কাদায় খেলেন গোপাল, পরে এলাকাবাসীও তাতে যোগ দেন। সেই মাটিতেই তৈরি হবে রাজবাড়ির দুর্গা প্রতিমা। আজ থেকেই প্রতিমার কাঠামো পুজো শুরু হয়েছে।
মনসা দেবীর সঙ্গে এখানে পূজিত হন তাঁর বোন নেতি, আর থাকে অষ্টনাগের মূর্তি। বিশেষত্ব হলো, পুজোয় ব্যবহার করা হয় শুধু সেই পদ্মপাতা যার উল্টোদিকে নৌকার ছাপ থাকে। পূজো উপলক্ষে রাজবাড়ির মাঠে বসেছে বড় মেলা, যেখানে ভিড় জমিয়েছেন অসংখ্য মানুষ।
রাজপরিবারের সদস্যরা নিজেরাই ভোগ রান্না করেন এবং প্রথা মেনে দেবীকে বরণ করেন। অনেক ভক্ত নিজের মনোস্কামনা পূরণের আশায় পায়রা উড়িয়ে থাকেন। এ ছাড়া টানা তিন দিন রাজবাড়িতে চলবে বিষহরি পালাগান, আর যতক্ষণ না গীত সম্পূর্ণ হয়, ততক্ষণ দেবীর বিসর্জন হয় না।
রাজ পরিবারের প্রধান প্রমথকুমার বসু জানিয়েছেন, “এবারের পুজো ৫১৫ বছরে পা দিল। সময় বদলালেও আমাদের রীতি একই রয়েছে।” গত বছর প্রায় ৮০ বছর পর দেবীর রথের চাকা পাল্টানো হয়েছে। সেই রথেই অধিষ্ঠান নেবেন কনকদুর্গা। এখানে দুর্গা কান্তিময় স্বর্ণবর্ণা, আর তাঁর সঙ্গী সিংহের পাশাপাশি থাকে এক সাদা বাঘও। দুর্গার চালিতে থাকেন তাঁর চার সন্তান ছাড়াও জয়া-বিজয়া, মহাদেব, ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মা চণ্ডী ও দেবী মহামায়া।

