28 C
Kolkata
August 3, 2025
কলকাতা

যুবতীকে অপহরণ করে ধর্ষণ ও মুক্তিপণ আদায়, অভিযুক্ত ২ সিভিক

প্রতীকী চিত্র

রাতের অন্ধকারে রাস্তায় আটকে যুবতীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ দুই সিভিক পুলিশের বিরুদ্ধে। সোমবার ভরসন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে স্বরূপনগরের বিথারি-হাকিমপুর অঞ্চলের খাঁপাড়ার কাছে।

সূত্রের খবর, বনগাঁর বাসিন্দা ওই যুবতী এবং তাঁর বাবা জরুরি কারণে চোরাপথে বাংলাদেশে আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। তাঁদের বাংলাদেশে পৌঁছে দেওয়ার জন্য পার্শ্ববর্তী গ্রাম স্বরুপদহের ধুর পাচারকারী আলমগীরের সঙ্গে চুক্তি হয়। সেই মতো এদিন সন্ধ্যেবেলা বিএসএফ-এর নজর এড়িয়ে বৈষ্ণবতলা সংলগ্ন বাগান ও ধানক্ষেত পেরিয়ে তারালি সীমান্তের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। এটি ধুর পাচারকারীদের একটি চোরাই রুট। বিষয়টি জানত মিলন ও জসিমুদ্দিন নামের দুই সিভিক পুলিশ। সেজন্য স্বরূপদহের বাসিন্দা এই দুই সিভিক চোরাপথে গাছের আড়ালে ওঁৎ পেতে অপেক্ষা করছিল। তাদের একজন ভিপি (ভিলেজ পুলিশ) ও অন্যজন মুনশী।

স্থানীয় বাসিন্দা ও তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই পথে ধুর পাচারকারী দালাল আলমগীরের সঙ্গে যাচ্ছিলেন যুবতী ও তাঁর বাবা। আচমকা দুই সিভিক তাদের ওপর চড়াও হতেই ধুরের দালাল আলমগীর বিএসএফ ভেবে ভয়ে পালিয়ে যায়। তখন ওই যুবতী ও তাঁর বাবাকে আটক করে রাত পাহারার দায়িত্বে থাকা সিভিক পুলিশ মিলন ও জসিমুদ্দিন। তাঁদের ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে। প্রথমে তাঁদের একটি লাল রঙের গাড়িতে তোলে। মিলন ও জসিমুদ্দিন দাবি করে, পুলিশের বড় সাহেব তাদের ডেকেছে, সেজন্য সেখানে তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এভাবে তাঁদের ফুসলিয়ে গাড়িতে তুলে একটি নির্জন বাড়িতে আটকে রেখে যৌন নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দাদের। এবং ছেড়ে দেওয়ার জন্য দেড় লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। ভয়ে ওই যুবতী ও তাঁর বাবা আত্মীয়দের কাছে ফোন করেন। সেখান থেকে প্রায় ৭০-৮০ হাজার টাকা ‘ফোন পে’-তে পাঠিয়ে দেন। তা সত্ত্বেও যুবতীর ওপর দফায় দফায় ধর্ষণের অভিযোগ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দাদের।

এদিকে বিএসএফ-এর ভয়ে পালিয়ে যাওয়া ধুরের দালাল আলমগীর ওই রাতেই কিছুক্ষণের মধ্যে ওই যুবতী ও তাঁর বাবার খোঁজ-খবর নেওয়ার চেষ্টা করে। বিএসএফ তাঁদের আটক করেছে কিনা, তা জানার জন্য অন্য এজেন্টদের মারফত খোঁজ নিতে শুরু করে। সেই তথ্য থেকে জানতে পারে, আদৌ বিএসএফ তাঁদের আটক করেনি। তখন সে ওই যুবতীকে ফোন করে জানতে পারে, দুই সিভিক পুলিশ তাঁদের আটকে রেখেছে। আলমগীর তাঁদের ফোন করে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাই। জবাবে সিভিক জসিমুদ্দিন ও মিলন তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য দশ হাজার টাকা দাবি করে। সেই মতো আলমগীর আরও দশ হাজার টাকা দিতেই ওই যুবতী ও তাঁর বাবাকে স্বরূপদহে পৌঁছে দেয়। যুবতী স্বরূপদহে আলমগীরের কাছে এসেই কান্নায় ভেঙে পড়ে। এবং সব খুলে বলে।

সব শোনার পর আলমগীর স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ও তৃণমূল নেতার দ্বারস্থ হন বলে সূত্রের খবর। স্বরূপদহের ওই তৃণমূল নেতা যুবতী ও তাঁর বাবাকে তাঁর নিজের বাড়িতে রাতে আশ্রয় দেন। সকালে দলের নেতা কর্মীদের ডেকে প্রথমে বিষয়টি নিয়ে একটি মিটিং হয়। বিষয়টি যাতে প্রকাশ্যে না আসে সেজন্য দলীয় স্তরে চেষ্টা করা হয়। পরে থানাকেও বিষয়টি জানানো হয়। থানা ওই দুই সিভিককে সাসপেন্ড করার প্রতিশ্রুতি দেয় বলে সূত্রের খবর। বিষয়টি ‘সংবাদ কলকাতা’র পক্ষ থেকে স্বরূপনগর থানার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও ফোন ধরেনি।

Related posts

Leave a Comment