27 C
Kolkata
April 12, 2025
দেশ

রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় মুক্তি পেল নলিনী শ্রীহরণ সহ ছয় সাজাপ্রাপ্ত

নতুন দিল্লি, ১১ নভেম্বর: আজ রাজীব হত্যা মামলায় ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের। ৩১ বছর পর এই মামলায় মুক্তি পেল ছয় সাজাপ্রাপ্ত। নলিনী শ্রীহরণ সহ ছয় জন দোষীকে মুক্তির নির্দেশ দিল দেশের শীর্ষ আদালত। শুক্রবার এই নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিভি নাগারথনার বেঞ্চ। নলিনী বাদে বাকি পাঁচ মুক্তিপ্রাপ্ত হলেন, রবিচন্দ্রন, মুরুগান, রবার্ট পায়াস, সান্থন ও জয়কুমার। গত মে মাসে মুক্তি পায় এ জি পেরারিভালান। সেই মামলা বিবেচনা করতে গিয়েই আদালত এই রায় দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালের ২১ মে এক আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে প্রয়াত হন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। তামিলনাড়ুর শ্রীপেরাম্বুদুরে একটি নির্বাচনী জনসভায় ঘটে এই ঘটনা। এই আত্মঘাতী জঙ্গির নাম ধানু। সে শ্রীলঙ্কার জঙ্গি গোষ্ঠী এলটিটিই-র মহিলা সদস্য ছিল। তদন্তে জানা যায় ধানু তাঁর নিজের শরীরে বোমা বেঁধে রাজীব গান্ধীর কাছে পৌঁছায়। এরপর বিস্ফোরণে নিজেকে উড়িয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকেও হত্যা করে সে। গোটা পৃথিবী আতঙ্কে শিউরে ওঠে। শোকের ছায়া নামে ভারত, বাংলাদেশ সহ গোটা উপমহাদেশে।
ভয়াবহ এই মৃত্যুর ঘটনায় মোট সাতজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয়। কিন্তু, রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করে তারা। তবে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হয়ে যাওয়ায় ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট মৃত্যুদণ্ডের সাজা স্থগিত করে দেয়। পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়।
এরপর দোষীরা ৩০ বছরের বেশি সাজা ভোগ করায় তামিলনাড়ু সরকার তাদের মুক্তির জন্য উদ্যোগী হয়। এব্যাপারে তামিলনাড়ু সরকারের পক্ষ থেকে ২০১৮ সালে একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। প্রথা মেনে রাজ্যপালের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে মুক্তির আবেদন করে তামিল সরকার। কিন্তু, দেশের প্রাক্তন প্রানধানমন্ত্রীর মর্মান্তিক হত্যার ঘটনায় দোষীদের মুক্তির আবেদনে সাড়া দেননি বিগত রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।

কিন্তু, হাল ছাড়েনি সাজাপ্রাপ্ত দোষীদের অন্যতম পেরারিভালান। সে আইনের ফাঁক গলে সাংবিধানিক সুবিধা পেতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। তাকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসে তামিলনাড়ু সরকার। রাজ্য সরকার তার আবেদনে বলে, দোষীরা ৩০ বছরের বেশি সাজা ভোগ করেছে। রাজীব হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্তদের এবার মুক্তি দেওয়া হোক। ফলে দেশের শীর্ষ আদালত গত ১৮ মে পেরারিভালানকে মুক্তির নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশের পর বাকিরাও মাদ্রাজ হাইকোর্টে মুক্তির আবেদন জানায়। তামিলনাড়ুর হাইকোর্ট এবিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের মুখাপেক্ষী হয়। সুপ্রিম কোর্ট পেরারিভালানের মতো সংবিধানের ১৪২ ধারা প্রয়োগ করে বাকি দোষীদেরও আজ মুক্তির নির্দেশ দেয়।

Related posts

Leave a Comment