32 C
Kolkata
April 19, 2025
রাজ্য

মমতা এবং লালু রেলকে দুধওয়ালা গাইয়ের মতো ব্যবহার করেছেন: দিলীপ ঘোষ

সংবাদ কলকাতা: বালেশ্বর রেল দুর্ঘটনার পর কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক রাজনৈতিক আক্রমণ করেছে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। কংগ্রেস থেকে তৃণমূল, সকলেই রেলমন্ত্রকের ব্যর্থতা বলে অভিযোগ করেছে। কিন্তু এব্যাপারে সোশ্যাল মাধ্যমে পাল্টা সরব হয়েছেন গেরুয়া পন্থীরাও। তুলে ধরা হয়েছে কংগ্রেস ও তৃণমূলের আমলে ঘটে যাওয়া একের পর এক দুর্ঘটনার ইতিহাস। জ্ঞানেশ্বরী থেকে সাঁইথিয়া ও গাইসল রেল দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক মৃত্যুর প্রসঙ্গও বিতর্কে চলে আসে। যে সময় রেল দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ ছিল তৃণমূল তথা মমতার হাতে। এপ্রসঙ্গে সাংবাদিকরা দিলীপ ঘোষের মুখোমুখি হয়ে তাঁকে কয়েকটি প্রশ্ন করেন। জবাবে কয়েকটি চোখা চোখা উত্তর দেন বিজেপি-র বর্তমান সর্বভারতীয় সভাপতি।

জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে নিউটাউন ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে আসেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা সাংসদ শ্রী দিলীপ ঘোষ। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সেখানে বালাসোরে ট্রেন দুর্ঘটনায় আহতদের নিয়ে এসে এরাজ্যের হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হল। জবাবে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমাদের রাজ্যের লোকেরা যদি নিয়ে আসেন, সেটা ওনাদের ব্যাপার। অনেকে সরকারি হাসপাতাল ছেড়ে প্রাইভেট হাসপাতালে যান। এখানকার লোকেরাই সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা পান না। সেখানে ওখান থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে। উড়িষ্যা রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা, ডিজাস্টর ম্যানেজমেন্ট এরাজ্যের থেকে অনেক ভালো। মেদিনীপুরের লোকজন ভুবনেশ্বর, কটকে চিকিৎসা করাতে যান। ওখানে কোনওরকম খামতি ছিল না। এখানকার কিছু স্থানীয় লোক আসতে চেয়েছিল, তাঁদের নিয়ে আসা হয়েছে। ওখানে রেলের হাসপাতাল পুরো খালি রয়েছে। এখানকার সরকারের আগ্রহ তারা নিয়ে এসে দেখাবে। সবাই সুস্থ থাকুক এটাই আমরা চাই।’

ঘটনাস্থলে এসে আহতদের কিভাবে চিকিৎসা হচ্ছে-তা জানতে প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করতে হল স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে। স্বাভাবিক আছে। যেখানে যেখানে অসুস্থরা গেছে, তাদের ট্রিটমেন্ট ভালো করে হোক প্রধানমন্ত্রী নিজে গেছেন। এর আগে কোথাও দুর্ঘটনা হয়েছে, সেখানে প্রধানমন্ত্রী নিজে গেছেন কিনা আমার জানা নেই। এটা স্বাভাবিক, প্রধানমন্ত্রী কোথাও এলে সেখানে সমস্ত কিছু ঠিকঠাক চলবে।

রেল দুর্ঘটনার জন্যে দায়ী রেল কর্তৃপক্ষ, রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। একথা বলেন অভিষেক। এই মন্তব্যের জবাবে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত এখানকার। রোজ পদত্যাগ চাওয়া হয়। একটা সুযোগ পেয়েছে বলার। এক্সিডেন্ট তো এক্সিডেন্ট! কেউ তো ইচ্ছা করে করে না। একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। সরকারের পক্ষে যা করার সেটা সরকার করছে। সরকার এই দুর্ঘটনার কারণ খুঁজছে। যাতে আগামী দিনে এরকম ঘটনা না ঘটে। কিন্তু অনেকেই এসময় রুটি সেঁকতে চান।

এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, ‘বাজেটে যাত্রী সুরক্ষায় জোর দেওয়া হয়না। আন্টি কলিসন ডিভাইস কাজ করেনি। দায় নিতে হবে রেলকে।’

মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের জবাবে দিলীপ বাবু বলেন, ‘মমতা ব্যানার্জি যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন, তখনকার আর এখনকার রেল একবার দেখুন। উনি আর লালু প্রসাদ রেলকে দুধওয়ালা গাই হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এখন একেবারে আধুনিক রেল হয়ে গেছে। যেমন স্পিড বেড়েছে, তেমন সুরক্ষা বেড়েছে। এখন রোজ রোজ দুর্ঘটনা হয় না। অনেকেই সমালোচনা করতে পারে, কিন্তু তাদের কার্যকালটাও একবার দেখা উচিত। তারা তো নাটক করেছেন, কাজ কোথায় করেছেন।

অন্যদিকে নাশকতার আশঙ্কা প্রকাশ করে রেলমন্ত্রীকে চিঠি সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর। এই প্রসঙ্গে বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি বলেন, ‘বিভিন্ন লোক বিভিন্ন রকম কল্পনা করছেন। কোনও একটা ঘটনা তো সত্য হবে। সেই জন্যই তদন্ত চলছে। যতক্ষণ না তদন্ত শেষ হচ্ছে, ততক্ষণ কিছু বলা যাবে না। কেন এরকম হল, সেটা বের করতে হবে। এত বড় দুর্ঘটনা হল কিভাবে, তার সত্যতা জানা দরকার আছে। সেই সত্য বের করার চেষ্টা করছে সরকার।’

Related posts

Leave a Comment