সংবাদ কলকাতা: আইপিএল ক্রিকেট যতই শেষের মুখে এসে দাঁড়াচ্ছে, ততই নানারকম ঘটনা ঘটে চলেছে৷ অনেকে ভাবতেই পারছেন না, ২৬০ রানের উপরে কোনও দল করলেও সেই দল বুক বাজিয়ে বলতে পারছে না প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তারা বাজিমাত করবে৷ সবচেয়ে অবাক হতে হয়, প্রতিপক্ষ দলও সেই নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে গিয়ে জয়ের হাসি হাসছে৷ এমনই ঘটনা দেখতে পাওয়া গেছে শুক্রবার ইডেন উদ্যানে৷ কে বলবে প্রথমে ব্যাট করে কেকেআর দল ২৬১ রান করে অনেকটাই নিশ্চিত ছিল পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে তাদের জয় আসছেই৷ কিন্ত্ত তা হল না৷ সেই ভাবনা কোনওভাবেই সফল হল না৷ বরঞ্চ বলতে দ্বিধা নেই, মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে পাঞ্জাব কিংস দল ২৬২ রান করে জয়ের উল্লাসে ইডেনের মাঠে উত্তাল হয়ে উঠল৷ পাঞ্জাবের খেলোয়াড়রা যখন আনন্দে আত্মহারা, তখন কেকেআরের সমর্থকরা গ্যালারিতে নীরবতা পালন করলেন৷ পাঞ্জাবের বেয়ারস্টো ৪৮ বলে ১০৮ রান করে অপরাজিত থাকেন৷ ইডেনে রান উঠছে বলে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা নানারকম অভিমত প্রকাশ করবেন৷ কিন্ত্ত খেলা দেখে মনে হয়েছে, বোলাররা এইভাবে কেন বল করছেন? পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে কেকেআরের বোলাররা এইভাবে বল করে ব্যাটসম্যানদের খেলার সুযোগ করে দেবেন? এর পিছনে কী কারণ আছে, তা যদি তদন্ত করা যায়, হয়তো অনেকগুলো প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে৷ যতই বলা হোক না কেন ইডেন ব্যাটসম্যানদের জন্য উইকেট তৈরি করা হয়েছে৷ সব কথা মেনে নিয়েও বলতে হয়, কেকেআর দল গত রবিবার ইডেন উদ্যানে বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে যে খেলা খেলেছে, তাতেও কিন্ত্ত এই ধরনের প্রশ্ন উঠতে পারে৷ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু মাত্র ১ রানে হার স্বীকার করেছে৷ তাও নিজেদের ভুলের কারণে৷ আবার এটাও দেখা গেল, গত শুক্রবার পাঞ্জাবের নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে গেলে ২৬২ রানের দরকার ছিল৷ তা ১ ওভার ২ বল থাকতেই হয়ে গিয়েছে৷ তাহলে কি একটা প্রশ্ন উঠবে না, বোলারদের ভূমিকা এখন এত দুর্বল হয়ে গিয়েছে, যার ফলে প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটসম্যানরা কোনও চিন্তাই করেন না, চার ও ছয় মারার জন্য৷
এই কথার মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠছে, বোলাররা বেগুনি টুপির লড়াইয়ে কে কাকে টেক্কা দিয়ে যাবে৷ কয়েকটা ম্যাচ আগে যশপ্রীত বুমরা সেই দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন৷ ইতিমধ্যেই বুমরা ১৩টি উইকেট নিয়েছেন৷ আবার কেকেআরের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে পাঞ্জাবের হর্ষল প্যাটেল ৯ ম্যাচে ১৪টি উইকেট নিয়ে বুমরাকে টপকে গেলেন৷ শুধু হর্ষল প্যাটেল ও বুমরা নন, এই দৌড়ে আরও বেশ কয়েকজন পাশাপাশি রয়েছেন৷ হর্ষল ১৪টি উইকেট নিলেও, বুমরার সঙ্গে ১৩টি উইকেট নিয়ে ফেলেছেন যুজবেন্দ্র চাহাল৷ কুলদীপ যাদবও ইতিমধ্যে ১২টি উইকেট তাঁর দখলে রেখেন৷ কুলদীপের সঙ্গে একই জায়গায় অবস্থান করছেন টি নটরাজন৷ তাঁরও ১২টি উইকেট ইতিমধ্যে ঝুলিতে রয়েছে৷ সেই কারণে বেগুনি টুপির লড়াই বেশ জমে উঠেছে৷ চতুর্থ স্থানে থাকা কুলদীপ থেকে নবম স্থানে থাকা জেরল্ড কোয়েৎজিরা সকলেই ১২টি করে উইকেট পেয়েছেন৷ দশম স্থানে রয়েছেন ম্যাথিসা পাখিরানা৷ তাঁর দখলে ১১টি উইকেট রয়েছে৷ তাই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে বেগুনি টুপির লড়াইয়ে কে কখন এগিয়ে যাবে, তা অাঁচ করা বেশ কঠিন হয়ে পড়বে৷ প্রতিটি খেলার শেষে তার অদলবদল হচ্ছে৷ শীর্ষে থাকা হর্ষলের সঙ্গে দশমে থাকা পাখিরানার তফাত মাত্র ৩টি করে উইকেট৷ হর্ষল যেমন উইকেট পাচ্ছেন, তেমনই প্রচুর রানও দিচ্ছেন৷ ইতিমধ্যেই তিনি ৯টি ম্যাচে ৩২৬ রান দিয়েছেন৷ আর বুমরা আট ম্যাচে ২০৪ রান দিয়েছেন৷ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এই ধরনের পরিসংখ্যান দেখতে পাওয়া যায়৷ আসলে কোন বোলার কোন ম্যাচে ক্লিক করবেন তা আগাম কেউই বলতে পারবেন না৷ কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে উইকেট নিয়ে পাঞ্জাবের বোলার হর্ষল প্যাটেল সবার নজর
কেড়ে নিয়েছেন৷
previous post