নতুন দিল্লি, ২০ জুন: পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী আটকাতে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে ফের মুখ পুড়ল রাজ্য সরকারের। পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলের চিরাচরিত সন্ত্রাসের সমস্ত সুযোগ বন্ধ করে দিল আদালত। কলকাতা হাইকোর্টের ১৫ জুনের দেওয়া নির্দেশকেই বহাল রাখল দেশের শীর্ষ আদালত। আজ সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে সাফ জানিয়ে দিল, ‘নির্বাচন মানে সন্ত্রাস করানোর লাইসেন্স নয়’। শীর্ষ আদালত আরও জানায়, ‘স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করতেই এই নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সেই নির্দেশে হস্তক্ষেপ করতে আমরা আগ্রহী নই। তাই কমিশন ও রাজ্যের স্পেশাল লিভ পিটিশন খারিজ করা হল।’
আদালতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সওয়াল, ‘প্রাথমিক মূল্যায়ণ থেকে দেখা যাচ্ছে, ৬১,৬৩৬ বুথের মধ্যে ১৮৯টি স্পর্শকাতর। এই বুথগুলির জন্য কিছু অতিরিক্ত বাহিনীর প্রয়োজন। রাজ্যের কাছে সেই সাহায্য চাওয়া হবে’। তখন রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির প্রশ্ন, ‘কমিশন কীভাবে হাইকোর্টের নির্দেশের বিরোধিতা করতে পারে? আপনারা রাজ্যের কাছে বাহিনী চেয়েছেন। সেই বাহিনী কোথা থেকে এল, তাতে আপনাদের কী? বাহিনী রাজ্য থেকে এল, নাকি পাশের রাজ্য থেকে এল, নাকি কেন্দ্রীয় বাহিনী এল, তাতে আপনারা কীভাবে প্রভাবিত হচ্ছেন? আপনাদের এই বিশেষ লিভ পিটিশন(SLP)-এর গ্রহণযোগ্যতা কী?’
এদিন বিচারপতি জানান, রাজ্যে ২০১৩ ও ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে। প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা করতে পারেন নি। জমা করলেও তাঁরা হিংসার সম্মুখীন হয়েছেন। এবারও সংঘর্ষ হচ্ছে। এদিন রাজ্য আদালতে সওয়াল করে, ১৩ জুন নির্দেশ নির্দেশ দেওয়ার পর ১৫ জুন ফের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতার উচ্চ আদালত। তখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পাল্টা প্রশ্ন করেন, এই ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পরিস্থিতির কী পরিবর্তন হয়েছে। জবাবে রাজ্য জানায়, পাঁচ রাজ্য থেকে পুলিশ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। এই জবাব শুনে আরও ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘তার মানে আপনাদের কাছে পর্যাপ্ত পুলিশ নেই, তাই আপনারা প্রায় আধ ডজন রাজ্যের কাছে সাহায্য চেয়েছেন। নির্বাচন করানো মানে হিংসার লাইসেন্স দেওয়া নয়। হিংসা কখনও নির্বাচনের সহযোগী হতে পারে না’।