33 C
Kolkata
August 2, 2025
বাংলাদেশ

খালেদার সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান, শুরু রাজনৈতিক জল্পনা

ফাইল চিত্র

নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সাক্ষাতে।  বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী ঢাকার গুলশানে খালেদার বাড়িতে বৈঠকে বসলেন খালেদা জিয়া এবং ওয়াকার-উজ-জামান। বৈঠকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ফজলে এলাহি আকবরও হাজির ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। নির্বাচন নিয়ে যখন মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কে চিড় ধরতে দেখা যাচ্ছে সেই সময় এই বৈঠক ঢাকার রাজনীতিতে বিশেষ ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে।এদিন রাতে স্ত্রী সারাহনাজ কামালিকা রহমানের সঙ্গে জিয়ার বাড়িতে উপস্থিত হন সেনা প্রধান।

বৃহস্পতিবার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি সরাসরি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জামাতের ‘ভূমিকা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘আমি ইসলামপন্থী সেই রাজনৈতিক দলের কাছে জানতে চাই, একাত্তরে আপনাদের ভূমিকা কী ছিল? আপনারা কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন? আপনারা কোন সেক্টর কম্যান্ডারের আন্ডারে (অধীনে) যুদ্ধ করেছেন?’ ক্ষমতার পালাবদলের পরে জামাত নেতৃত্ব নিজেদের ‘একমাত্র দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল’ বলে তুলে ধরতে চাইছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভি।এই দ্বন্দ্বের পেছনে জামাতের ক্রমশ বাড়তে থাকা প্রভাবের কারণেই বিএনপি অসন্তুষ্ট। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, ইউনূসের জমানায় জামাতকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিশেষত, অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা পদে জামাত-ঘনিষ্ঠদের নিয়োগ এবং নির্বাচন ঘিরে টালবাহানার জেরে সেই অসন্তোষ আরও বেড়েছে। তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে রিজভির বক্তব্যে।

উল্লেখ্য, জামানের স্ত্রী কামালিকা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার তুতো বোন। বিএনপি প্রধানের ‘প্রেস উইং’-এর সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় ৪০ মিনিট দু’জনের কথা হয়েছে। খালেদার দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন সেনাপ্রধান ওয়াকার। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ইউনূস সরকার নানা টালবাহানা করে জাতীয় সংসদের নির্বাচন পিছিয়ে দিচ্ছে বলেও ইতিমধ্যেই অভিযোগ তুলেছে খালেদার দল বিএনপি। এই অস্থির পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে আবার সেনার ‘ভূমিকা’ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। হাসিনা-পরবর্তী পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেনারেল ওয়াকারের ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে।ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বিএনপি এবং কট্টরপন্থী দল ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ বা ‘জামাত’-এর সংঘাত ক্রমশ বাড়ছে।

ইতিহাস বলছে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জামাত নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে পাকিস্তান সেনার পক্ষে কাজ করেছিলেন। রাজাকার ঘাতকবাহিনীর নেতা হিসাবে গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে একাধিক জামাত নেতার বিরুদ্ধে। হাসিনা জমানায় কয়েক জনের সাজাও হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। অন্য দিকে, হাসিনার পিতা শেখ মুজিবের দল আওয়ামী লীগের মতোই মতোই মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহ্যবাহী বিএনপিও। খালেদার স্বামী তথা বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান পাক সেনার প্রথম বাঙালি অফিসার হিসাবে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। ব্রিটেনের প্রখ্যাত কিংস কলেজের এই প্রাক্তনী এক সময় হাসিনার প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার ছিলেন। দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে তিনি সিদ্ধহস্ত। খালেদার সঙ্গে তাঁর বৈঠক নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।

Related posts

Leave a Comment