27 C
Kolkata
November 1, 2025
রাজ্য

এবার লাভের মুখ দেখছেন রানাঘাটের সড়কপাড়ার মৃৎ শিল্পীরা

সংবাদ কলকাতা: আকাশের মুখ ভার। বৃষ্টি ভিলেন। দুর্গা পুজো দোড়গোড়ায়। সেজন্য মণ্ডপে মণ্ডপে জোর কদমে চলছে প্রস্তুতি। আর প্রকৃতির খাম খেয়ালিপনায় দেবী দুর্গার মূর্তি করতে কুমোরটুলির মৃৎ শিল্পীদের এখন কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে। কারণ, আর কিছুদিন পর বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসব। সাজ সাজ রব পূজা মন্ডপ থেকে নানা পরিকল্পনা পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যে। তবে সবার থেকে বেশি ব্যস্ত মৃৎ শিল্পীরা। প্রতিমা না শুকানোয় বিদ্যুতের পাখা দিয়ে প্রতিমা শুকিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। তবে মাঝে মধ্যে বাধ সেঁধেছে আকাশের গোমড়া মুখ।বৃষ্টির ভ্রকুটিতে কুমোরপাড়ার মৃৎ শিল্পীরা এখন নাওয়া খাওয়া ভুলে প্রতিমাকে তার অপরূপ সজ্জায় সাজিয়ে তুলতে ব্যস্ত।

তবে সারা বছরের এতো পরিশ্রম, এই শারদীয়া উৎসবের সময় সকলেই দুটো বাড়তি রোজগারের আশায় থাকেন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বাজারে মৃন্ময়ী মাকে কাদা-মাটি, খড়, সুতলি, বাঁশ, পেরেক, রঙ, তুলির টান দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁদের। নদীয়ার রানাঘাটের এক মৃৎ শিল্পী প্রভাস পাল বয়সে প্রবীণ হলেও লাভের আশা দেখছেন। তাঁর কথায়, কারিগর দিয়ে সব কাজ হয় না। নিজে প্রতিমা তৈরির কাজে যুক্ত হলে লাভ হবেই। প্রভাস বাবুর বয়স এখন ৮৬ বছর। এবছর তিনি ২০টি দুর্গা প্রতিমা তৈরি করছেন। তবে কারিগর আছে ৩জন। তাঁদের প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ টাকা করে মজুরি দেন। তবে ফিনিশিং-এর কাজ নিজে হাতে করছেন।

আরেক শিল্পী জানান, প্রকৃতপক্ষে বর্তমান প্রজন্মের যুবকেরা এই শিল্পের কাজে নতুনভাবে আসতে চাইছেন না। তাছাড়া কাদা মাটির নোংরা কাজ। এছাড়াও সরকার পুজো কমিটিগুলির বাজেটের জন্য অনুদান বাড়িয়ে দেওয়া দিলেও প্রতিমার দাম কিন্তু নির্ধারণ করে দেওয়া হয় না। অনেকে পুজা কমিটিগুলি প্রতিমা কিনতে এসে দরকষাকষি করে দাম কমাতে চান। শিল্পীরা জানান, ন্যূনতম ১টি দুর্গা প্রতিমা ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকার মধ্যে থাকে। সারাবছর যেমন তেমনভাবে চললেও, পুজো এলে সব কাজ বাদ দিয়ে ২০টি দুর্গা প্রতিমা বিক্রি করে ১ লাখ টাকা লাভ করার আশা দেখছেন তাঁরা।

অন্যদিকে এক স্থানীয় বাসিন্দা প্রতিমা তৈরির কাজ দেখতে এসে বলেন, মৃত শিল্পীদের শিল্প নৈপুণ্যতার প্রকৃত মূল্য তাঁরা পান না। এছাড়াও আগের তুলনায় পুজোর সংখ্যা বাড়লেও ভালো মৃত শিল্পীদের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। আবার অনেকে এই শিল্পকে পেশা হিসেবে না দেখে, তাঁরা পুজোর মরসুমে প্রতিমা গড়ার কাজ করেন। বছরের অন্য সময়গুলিতে তাঁরা অন্য কাজে লিপ্ত থাকেন। তবে যত সমস্যাই থাকুক না কেন, লাভের মুখ দেখছেন রানাঘাটের সড়কপাড়ার মৃৎ শিল্পী প্রভাস পাল ও তাঁর সহযোদ্ধারা।

Related posts

Leave a Comment