31 C
Kolkata
August 1, 2025
দেশ বাংলাদেশ

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে তৎপরতা শুরু ইউনূস সরকারের

ফাইল চিত্র

আওয়ামি লিগকেও এখনও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়নি। তবে এবার কি হাসিনার দল নিষিদ্ধ হবে? এই প্রশ্নের জবাব দিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি ঘোষণা করেছেন, বাংলাদেশে এবার নিষিদ্ধ হতে চলেছে আওয়ামী লীগ। বিএনপি অবশেষে রাজি হওয়ায় এ বিষয়ে বাংলাদেশে রাজনৈতিক ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এবার সরকার আইনি পদক্ষেপ নিতে চলেছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে উঠেপড়ে লেগেছে ইউনূস সরকার। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

আসিফ বলেন, আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ঐকমত্য তৈরি হচ্ছে। দেশের মানুষ তৎকালীন ক্ষমতাসীন ওই দলের অগণতান্ত্রিক এবং একরোখা মনোভাব ও কার্যকলাপ মেনে নিতে পারেনি। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এমন ঐকমত তৈরি হলে সরকারের জন্য যেকোনও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা সহজ হবে।
সূত্রের খবর ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হতে পারে আওয়ামী লীগকে।

প্রসঙ্গত হাসিনা সরকারের পতনের পরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার জন্য উঠেপড়ে লাগে। কিন্তু উপদেষ্টা আসিফের ঘোষণার পরেই প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাউদ্দিন নাসিম জানিয়েছেন, একটি গণতান্ত্রিক দল হিসাবে আমরা সব সময়ে মানুষের পাশে থেকেছি। বারে বারে আন্দোলনে নেমে আমরা দেশকে গণতন্ত্রের পথে ফিরিয়ে এনেছি। সেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা চক্রান্ত নতুন নয়। ইউনূস সরকার এই পথে হাঁটলে প্রমাণ হবে তারা প্রকৃতই পাকিস্তান ও আইএসআই-এর চর।’ পাশাপাশি তিনি আরো জানিয়েছেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষ এর উপযুক্ত জবাব দেবেন।

দিন কয়েক আগে বাংলাদেশের নির্বাচন সংস্কার কমিশন অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছিল, আওয়ামী লীগকে আদালত বা সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা না করলে তারা নির্বাচনে লড়তে পারবে। ভোটযুদ্ধে নামতে হাসিনার দলের এমনিতে কোনও বাধা নেই। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘোষণায় ক্ষেপে ওঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে ইউনূস সরকারকে চাপ দিতে থাকেন তাঁরা। তাঁদের তালে তাল মেলায় বিএনপি, জামাতও। এরপরেই অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশে। দিকে দিকে মুজিব ও হাসিনার সম্পত্তি ধ্বংস করা চলতে থাকে। আওয়ামির নেতা-কর্মীরাও। এই আবহে উপদেষ্টা সজীব ভূঁইয়া জানিয়ে দিয়েছেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে বর্তমান সরকার শিগগিরই পদক্ষেপ নেবে। তবে শুধু ঘোষনা করাই নয়, এই বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছতে রাজনৈতিক দলগুলোকে একজোট করার প্রক্রিয়াও চলছে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ২২ অক্টোবর হাসিনার দলের ছাত্র শাখা ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ইউনূস সরকারে জানিয়েছিল, ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯’ অনুযায়ী এই পদক্ষেপ। ওই আইনের তফসিল-২–এ ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামের ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত করার কথাও বলা হয়েছিল ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

আসিফ আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, সাধারণ মানুষ কিংবা রাজনৈতিক দল, যে বা যারাই হই না কেন, আমরা এ দেশের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করি। ফলে, ৫ অগস্টের পরে জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা ও চাওয়ার জায়গা আছে, সেগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিৎ। সে জায়গা থেকে বিএনপির পক্ষ থেকে আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধের যে দাবি উঠেছে, আমি বিষয়টিকে সাধুবাদ জানাতে চাই। বিচার প্রক্রিয়া ছাড়াও ৪টি আইন রয়েছে, যেখানে সরকার নির্বাহী আদেশে যে কোনও দলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে, এটার আইনি ফ্রেমওয়ার্ক কী হবে, এ বিষয়ে সরকার এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।’

এদিকে উপদেষ্টা আসিফের এই তুঘলকি ঘোষণার পরেই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাউদ্দিন নাসিম জানিয়েছেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক দল হিসাবে আমরা সব সময়ে মানুষের পাশে থেকেছি। বারে বারে আন্দোলনে নেমে আমরা দেশকে গণতন্ত্রের পথে ফিরিয়ে এনেছি। সেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা চক্রান্ত নতুন নয়। ইউনূস সরকার এই পথে হাঁটলে প্রমাণ হবে তারা প্রকৃতই পাকিস্তান ও আইএসআই-এর চর।’ তিনি বলেন, ‘দেশের ১৮ কোটি মানুষ এর উপযুক্ত জবাব দেবেন।’

কিন্তু কেন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে? এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের একাংশের যুক্তি, গত ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ মানুষের উপর ‘উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ’ চালিয়েছে এবং শত শত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিকে হত্যা করেছে। বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে আদালত ইতিমধ্যেই চার্জ গঠনের অনুমতি দিয়েছে। দলের সভানেত্রী হাসিনাও সরাসরি খুনের মামলায় অভিযুক্ত। তাই তাদের নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন।



সব শোনার পর আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে সুষ্ঠ নির্বাচন করে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কোনও সদিচ্ছাই নেই মুহাম্মদ ইউনূসের। বরং অন্ধ ভারত বিরোধিতা এবং আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা এই দুটি তাস খেলে আমৃত্যু ক্ষমতায় টিকে থাকবার নোংরা খেলায় মেতেছেন তিনি।

Related posts

Leave a Comment