October 31, 2025
কলকাতা

তরুণ আইনজীবীদের নতুন আইন শেখা উচিত: কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি

“আইনজীবীরা অবসর নেন না, বিচারপতিরা নেন”—এভাবেই মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনম, আজ সকালে সিটি সেন্টারে নতুন আদালত ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। নিজের কর্মজীবনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন: “আমি বিচার বিভাগে ১৬ বছর কাটিয়েছি।

অবসরের পর আবার বার-এ ফিরতেও পারি।”প্রধান বিচারপতি শিবগণনমের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং পশ্চিম বর্ধমানের ইন-চার্জ বিচারপতি ড. অজয় কুমার মুখার্জি। তাঁরা যৌথভাবে অত্যাধুনিক, চারতলা বিশিষ্ট উপ-বিভাগীয় আদালত ভবনের উদ্বোধন করেন, যা আগে ভাড়া করা পুরনো কোর্ট ভবনের পাশেই তৈরি হয়েছে।বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি তরুণ আইনজীবীদের আহ্বান জানান নতুন আইন সম্পর্কে জ্ঞান বাড়াতে।

তিনি বলেন, “অনেক নতুন আইন ও ট্রাইবুনাল চালু হচ্ছে। তরুণ আইনজীবীরা এগুলো সম্পর্কে নিজেদের পরিচিত করুন। শিল্পাঞ্চলগুলোতে বিশেষ ধরনের আইনি জটিলতা তৈরি হয়, এবং আমরা আশা করি এসব মামলা স্থানীয় স্তরেই মিটবে, হাইকোর্ট পর্যন্ত পৌঁছাবে না।”তিনি উচ্চ আদালতগুলিতে বাড়তে থাকা মামলার জটের কথাও উল্লেখ করেন। আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত শুধুমাত্র দেওয়ানি মামলাই ঝুলে আছে ১৬,৮৯২টি। ২০২৪ সালের শেষ থেকে ২০২৫ সালের শুরু পর্যন্ত দেশের ছয়টি হাইকোর্টে মোট ৩৫,৫৭,৬৩৭টি মামলা ঝুলে ছিল।


এর মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টেই ১.২৭ লক্ষেরও বেশি মামলা দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে মীমাংসিত হয়নি।নতুন ভবন নিয়ে শিবগণনম বলেন, “এই ভবনটি ন্যাশনাল কোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী তৈরি হয়েছে। আমি আইনজীবীদের অনুরোধ করছি ভবনটির মর্যাদা রক্ষা করতে, আবর্জনা বা দখলদারি যেন না হয়।

আমার এক পূর্বসূরি অন্য জায়গায় এমন হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।” তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও আইনমন্ত্রী ঘটককে সময়মতো অর্থ বরাদ্দের জন্য ধন্যবাদ জানান।ন্যাশনাল কোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম হলো ভারতের প্রধান বিচারপতির উদ্যোগে তৈরি একটি কাঠামো, যার উদ্দেশ্য বিচারব্যবস্থার কার্যকারিতা, মান এবং সময়নিষ্ঠতা বাড়ানো। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া ২৯ কোটি টাকার প্রকল্পের নির্মাণকাজ এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি।

বিচারপতি মুখার্জি বলেন, “আমরা আশা করছি ডিসেম্বরের মধ্যেই নতুন ভবনে নিয়মিত আদালতের কার্যক্রম শুরু হবে।”দুর্গাপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেবব্রত সাইন বলেন, “আমরা গত ২০ বছর ধরে একটি স্বতন্ত্র কোর্ট ভবনের দাবি জানিয়ে আসছি।” আইনমন্ত্রী ঘটক যোগ করেন, “মামলার ভয়াবহ জট কাটাতে হলে বিচারপ্রক্রিয়ার গতি বাড়াতে হবে। জেলা স্তরে অবকাঠামো উন্নয়নই এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেবে।”

Related posts

Leave a Comment