বিহার বিধানসভা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পরই নির্বাচনী ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে এবার দলের অন্যতম প্রধান মুখ হিসেবে সামনে রেখেছে বিজেপি, যিনি পুরো প্রচার অভিযানের নেতৃত্ব দেবেন।যোগী আদিত্যনাথ ২৪টিরও বেশি নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখবেন, যা দুই দফা ভোটের মধ্যে ৫০টিরও বেশি বিধানসভা আসনকে কভার করবে। বিজেপির সূত্রে জানা গেছে, যোগীর সভাগুলির চাহিদা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পরেই সর্বাধিক। বিহারের বহু নেতা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে অনুরোধ করেছেন যেন তাঁদের এলাকায় যোগীর সভা অন্তর্ভুক্ত করা হয়, কারণ তাঁর জনপ্রিয়তা সীমান্তবর্তী জেলাগুলো—গোপালগঞ্জ, সারন, সিওয়ান ও ভাল্মিকীনগর পর্যন্ত বিস্তৃত।
‘বুলডোজার বাবা’ নামে পরিচিত যোগী আদিত্যনাথ তাঁর কঠোর আইন প্রয়োগ এবং দ্রুত প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের জন্য জনমানসে এক শক্তিশালী ভাবমূর্তি তৈরি করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তাঁর বক্তৃতা বিজেপির কোর সমর্থক গোষ্ঠীকে অনুপ্রাণিত করে এবং স্বাভাবিকভাবেই বিপুল ভিড় টানে।যোগীর পাশাপাশি উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য ও ব্রজেশ পাঠকসহ উত্তরপ্রদেশের একাধিক মন্ত্রী বিহারে প্রচার চালাবেন। মৌর্যকে বিহার নির্বাচনের সহ-প্রভারি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে; তিনি কৌশল, সমন্বয় ও প্রার্থীদের পরিচালনার দায়িত্ব দেখবেন। মৌর্য, শাক্য, সাইনি ও কুশওহা সম্প্রদায়ের সঙ্গে তাঁর গভীর যোগাযোগ বিজেপির সামাজিক সমীকরণে বড় ভূমিকা রাখবে।
বিজেপি উত্তরপ্রদেশ থেকে ১০০-রও বেশি বিধায়ক ও এমএলসি-কে বিহারের নির্দিষ্ট আসনগুলোয় প্রচার ও পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে। প্রাক্তন মন্ত্রী ড. মহেন্দ্র সিং প্রায় ৪০টি আসনের দায়িত্বে, জল শক্তি মন্ত্রী স্বাধীনতা দেব সিং আরা জেলার দায়িত্বে, এবং পরিবহন মন্ত্রী দয়াশঙ্কর সিং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে মিলে প্রায় ৪৮টি আসন পরিচালনা করবেন।তাছাড়া, উত্তরপ্রদেশের একাধিক সাংসদ ও প্রাক্তন সাংসদ—ড. মহেশ শর্মা, ভোলা সিং, রাজকুমার চাহার, রঘব লাখনপাল ও সুব্রত পাঠক—বিহারে প্রচারের দায়িত্ব পেয়েছেন। একইভাবে বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি রেখা ভার্মা, প্রাক্তন মন্ত্রী সিদ্ধার্থনাথ সিং ও সতীশ চন্দ্র দ্বিবেদী, দেবরিয়ার বিধায়ক শালভমণি ত্রিপাঠী ও প্রাক্তন সাংসদ বিনোদ সোনকার নির্বাচনী প্রচার ও সংগঠনমূলক কাজে যুক্ত থাকবেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, উত্তরপ্রদেশের প্রশাসনিক দক্ষতা ও হিন্দুত্বভিত্তিক ভাবমূর্তি বিহারে প্রজেক্ট করার লক্ষ্যেই বিজেপি এই বিশাল রাজনৈতিক শক্তি মোতায়েন করেছে। যোগী আদিত্যনাথের জনপ্রিয়তা ও দলের কৌশলগত নেতাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি বিহারে শক্তিশালী প্রচারণা গড়ে তুলতে চাইছে।উল্লেখ্য, বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫ দুই দফায় অনুষ্ঠিত হবে—৬ নভেম্বর ও ১১ নভেম্বর। ভোট গণনা হবে ১৪ নভেম্বর।

