পারুল খামারিয়া, কলকাতা, ৫ মে: ‘বন্দেমাতরম’ মানে ‘দেশ-মা’-কে বন্দনা করা। এই মা’ অখণ্ড ভারতবর্ষের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। তিনি মাতৃকা সাধনার এক সনাতনী ভৌমরূপ। বন্দেমাতরম মন্ত্র উচ্চারণ করে ভারতবর্ষে স্বাধীনতা আন্দোলনে আত্মবলিদান দিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। এই মন্ত্রের অসাধারণ আকর্ষণী শক্তি, দিব্যশক্তি। এই মন্ত্রই এখন ভারতের সুরক্ষা-কবচ। সেই মন্ত্রের শক্তিকে সার্ধ শতবর্ষে এসে বিশেষভাবে অনুশীলন করে অন্তরাত্মায় শান দিতেই জাতীয় সাহিত্য প্রকাশনী ট্রাস্টের সদস্যবৃন্দ ব্রতী হয়েছেন, অনুষ্ঠানে বারবার সে কথাই স্মরণ করেছেন দর্শক ও শ্রোতামন্ডলী।
গত ৪ ঠা মে, গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অফ কালচারের বিবেকানন্দ সভাগৃহে অনুষ্ঠিত হল এই বর্ণাঢ্য আলোচনা সভা। সেই সঙ্গে আয়োজিত হয় এক উজ্জ্বল সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন ইনস্টিটিউটের সম্পাদক স্বামী সুপর্ণানন্দজী মহারাজ। সূচক ভাষণ দেন ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক শক্তিময় দাশ। সভায় ছিল বহু প্রবুদ্ধ মানুষের গৌরবময় উপস্থিতি।
‘ভারতবর্ষ’ নামক এক অতুল্য দেশকে জননী-জ্ঞানে শ্রদ্ধা-ভক্তির নামই ‘বন্দেমাতরম’। যে দেশে ভারতবাসীর জন্ম, যে দেশের সম্পদ গ্রহণ করে ভারতবাসীর শরীর গঠিত হয়েছে, যে দেশের গৌরবে ভারতীয় নাগরিকবৃন্দের অন্তঃকরণ অপার আনন্দ লাভ করে, যে দেশ ভারতবাসীকে অন্তরাত্মার সন্ধান দিয়েছে – তারই মাতৃরূপা ‘ভারতমাতা’ — এমনই বোধ অনুভূত হয়েছে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী ‘দেশের মাটি’ সংগঠনের সঙ্গীত ও বাচিক শিল্পী এবং দর্শকমণ্ডলীর। সেই ভাবজগতে অবগাহন করবেন বলেই অনুষ্ঠানে এসেছেন এবং অংশগ্রহণ করেছেন।
এদিনের উদ্বোধনী সত্রে সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সুরের ছোঁয়া’ পরিচালিত সংস্থা সমবেত সঙ্গীত উপস্থাপন করেন। ‘দেশের মাটি মাতৃ মিলন মন্দির’ পরিচালিত একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন সঙ্ঘমিত্রা মিশ্র। ‘দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির’ পরিচালিত একক সঙ্গীত গেয়েছেন স্নেহাংশু দত্ত। গীতি আলেখ্য পরিবেশিত হয় প্রসেনজিৎ মণ্ডলের ‘রানাঘাট কথামালা’র দ্বারা।
একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন সুমিত্রা খাসনবিশ, ড. রুবেল পাল, অনুরাধা চক্রবর্তী ও আরও অনেকে। আবৃত্তি পরিবেশন করেন অসীমা ভড়, দীপান্বিত বসু সরকার, ব্রততী ভট্টাচার্য ও আরও গুণীজন। সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করেন অদিতি চক্রবর্তী ও রীনা রায়ের ‘ধানসিঁড়ি ভারত’। এছাড়া আরও অনেক গুণী মানুষ তাদের উপস্থাপনা রাখেন দর্শকদের সম্মুখে। অনুষ্ঠানের সহযোগিতায় ছিলেন রূপা চক্রবর্তী ও শ্রেয়সী চক্রবর্তী। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন সুনন্দা হালদার, মল্লিকা রায় ও সুব্রত হাইত এবং অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা ও সঞ্চালনায় ছিলেন মিলন খামারিয়া।
previous post