ওয়াশিংটন, ২০ আগস্ট: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভাবনা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর বক্তব্য, যুদ্ধ চালিয়ে যেতে গিয়ে পুতিন ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে শান্তিচুক্তি সম্ভব হলেও, যদি তিনি রাজি না হন, তবে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে পুতিনকে।
১৫ আগস্ট আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। সেই বৈঠকে সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশের কথা উল্লেখ করেন পুতিনও। পরে ১৮ আগস্ট (ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ১০টা) হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। বৈঠকের শুরুতেই ট্রাম্প জেলেনস্কিকে আশ্বাস দেন যে, আমেরিকা ইউক্রেনের পাশে রয়েছে। ২০২৪ সালের বৈঠকে জেলেনস্কিকে প্রকাশ্যে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলেছিলেন বলে বিতর্ক হয়েছিল, কিন্তু এবার ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দেন— বৈঠকের ফল যাই হোক, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে সমর্থন করবে।
অফিস বৈঠকের পর ট্রাম্প একটি দীর্ঘ পোস্টে জানান, বৈঠককে তিনি সফল মনে করছেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জার্মানির চ্যান্সেলার ফ্রেডরিক মার্জ, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব, ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রাট এবং ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইন। আলোচনায় মূলত ইউক্রেনের নিরাপত্তা ও ইউরোপীয় দেশগুলির সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি চেষ্টা করছেন পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে সরাসরি বৈঠকের আয়োজন করতে। তাঁর পরিকল্পনা, দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান প্রথমে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবেন, এরপর একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে তিনি অংশ নেবেন। জার্মান চ্যান্সেলার মার্জের দাবি, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই পুতিন-জেলেনস্কি বৈঠক হতে পারে।
একটি সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “আমার মনে হয় যুদ্ধ করতে করতে পুতিন ক্লান্ত। সবাই ক্লান্ত। যদি সত্যিই শান্তিচুক্তির পথে এগোনো যায়, তবে জেলেনস্কি ও পুতিন—দুজনেরই কিছুটা নমনীয়তা দেখানো প্রয়োজন।”
তবে ট্রাম্প স্পষ্ট করেছেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র সেনা পাঠাবে না। তাঁর বক্তব্য, জার্মানি, ফ্রান্স, ব্রিটেন ও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশ চাইলে ইউক্রেনে সেনা পাঠিয়ে নিরাপত্তা জোরদার করতে পারে, কিন্তু আমেরিকা সরাসরি সামরিকভাবে যুক্ত হবে না।

