দগ্ধ অবস্থায় মৃত্যুর আগে দেওয়া বয়ানই হতে পারে অপরাধ প্রমাণের সবচেয়ে বড় দলিল—এই মন্তব্যে কলকাতা হাই কোর্ট বহাল রাখল এক বাড়িওয়ালার যাবজ্জীবন সাজা।
২০১৩ সালের জানুয়ারিতে বেলেঘাটার ঠাকুরবাগান এলাকায় দোকান চালাতেন সঞ্জয় হালদার। রাতে দোকান বন্ধ করে ফেরার পথে বাড়ির সামনে মদ্যপ অবস্থায় বাড়িওয়ালা অরিজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও আরও কয়েকজনকে দেখতে পান তিনি। আপত্তি তোলায় শুরু হয় বাগ্বিতণ্ডা। অভিযোগ, অরিজিতের ইঙ্গিতেই সহযোগীরা কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় সঞ্জয়ের শরীরে। প্রাণ বাঁচাতে পুকুরে ঝাঁপ দিলেও, ৯৮ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে শুয়েই দু’বার বয়ান দেন সঞ্জয়। প্রথমবার চিকিৎসককে ঘটনার কথা জানান, পরে পুলিশকে অভিযুক্তদের নামসহ বিস্তারিত বিবরণ দেন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁর। তদন্তে উঠে আসে, বাড়ি খালি করার চাপ থেকেই পরিকল্পিত খুনের ছক কষেছিল বাড়িওয়ালা।
প্রতিরক্ষার দাবি ছিল—ভুক্তভোগী মদ্যপ ছিলেন, অতীতে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন এবং বয়ানে অসঙ্গতি রয়েছে। কিন্তু হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, দুই বয়ানের মূল বক্তব্য একই এবং মৃত্যুর সময়ও তিনি পূর্ণ সচেতন ছিলেন। আদালতের মতে, মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেওয়া কথাই সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ।
ফলত, নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখে যাবজ্জীবন সাজা বহাল থাকল অরিজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে।
previous post
