October 31, 2025
বিদেশ

মায়ানমারে রাজনৈতিক পালাবদলের ইঙ্গিত, নজর রাখছে ভারত–সুযোগ খুঁজছে চিন

পাঁচ বছর পর ফের সাধারণ নির্বাচনের পথে মায়ানমার। ২০২০ সালে শেষ ভোটে আউং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) জয়ী হলেও, বছর ঘুরতেই সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখল করে সেনা। এ বার ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে জুন্টা সরকার। তবে এনএলডি-সহ অনেক গণতন্ত্রপন্থী দলকে ভোটে অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। তাছাড়া এমন নিয়ম আনা হয়েছে যাতে কোনও রাজনৈতিক দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায়। সব মিলিয়ে আগামী বছরেই মায়ানমারের রাজনৈতিক পালাবদল নিশ্চিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

ভারত প্রতিবেশী এই দেশের পরিস্থিতির দিকে গভীরভাবে নজর রাখছে। কারণ রাজনৈতিক অস্থিরতা কিংবা চিনের প্রভাব— দুই-ই ভারতের নিরাপত্তা ও কূটনীতির উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
২০২১ সালে সু চিকে বন্দি করার পর থেকেই মায়ানমারে সেনা সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ বাড়তে থাকে। উত্তর মায়ানমারে একাধিক বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে বেজিং। সূত্র বলছে, চিনের প্রত্যক্ষ মদতেই বিদ্রোহীদের শক্তি বেড়েছে। তাদের প্রধান লক্ষ্য ‘চিন-মায়ানমার অর্থনৈতিক করিডর’, যা দক্ষিণ-পূর্ব চিন থেকে ভারত মহাসাগর পর্যন্ত সড়ক ও রেল যোগাযোগ স্থাপন করবে। কাজ শুরু হলেও প্রকল্পটি এখন স্থগিত। রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূলে এলে ফের এগোতে চায় বেজিং।

চিন ইতিমধ্যেই বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলিকে একত্র হওয়ার বার্তা দিয়েছে। মায়ানমারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি যে ভারতের উত্তর-পূর্বে সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে, সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন। কারণ পূর্ব সীমান্তে চিনের প্রভাব বাড়লে নয়াদিল্লির কৌশলগত সমস্যা আরও গভীর হতে পারে। পশ্চিমে পাকিস্তানের সঙ্গে বেজিংয়ের ঘনিষ্ঠতা বরাবরের, যদি পূর্বেও প্রভাব বিস্তার করে, তবে ভারতের জন্য তা দ্বিমুখী চাপ হয়ে দাঁড়াবে।

এই প্রেক্ষাপটে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, নয়াদিল্লিকে আরও সক্রিয় হতে হবে। আরাকান আর্মির মতো কিছু বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করলে ভারতের পক্ষে লাভজনক হতে পারে। উত্তর-পূর্বের কয়েকটি রাজ্যের নেতারা ইতিমধ্যেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলেও খবর। তবে শুধু আঞ্চলিক স্তরে নয়, কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকেও আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলেই মত বিশ্লেষকদের।

Related posts

Leave a Comment