October 31, 2025
দেশ

রুশ তেল কেনা নিয়ে বিতর্কে কূটনৈতিক ঝড় — মোদি-ট্রাম্প কথোপকথন ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে

নয়াদিল্লি, ২অক্টোবর:রুশ তেল আমদানি ইস্যুতে ফের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ঝড়ের কেন্দ্রে ভারত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি— প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন রাশিয়া থেকে তেল কেনা “বহু কমিয়ে” দেবে ভারত। কিন্তু নয়াদিল্লি এই দাবি নস্যাৎ করেছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক মহল থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি— উভয় দিকেই চাপ বাড়ছে কেন্দ্রের উপর।ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের দীপাবলি অনুষ্ঠানে বলেন,

“আমি প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি রাশিয়া থেকে খুব বেশি তেল কিনবেন না। যুদ্ধ শেষ হোক— সেটাই চান তিনি। ইতিমধ্যে আমদানি কমিয়েছে ভারত, আরও কমবে।”
পিছল এক সপ্তাহে চতুর্থবার একই দাবি করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যা নিয়ে কূটনৈতিক অস্বস্তি আরও বাড়ল।কিন্তু ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তা একেবারে খণ্ডন করে জানিয়েছে— রুশ তেল নিয়ে কোনোরকম প্রতিশ্রুতি ভারত দেয়নি। তারা জানিয়েছে, ভারতের জ্বালানি নীতি “জাতীয় স্বার্থ ও সাধারণ মানুষের সুরক্ষাকে প্রাধান্য দেয়,” এবং ভূরাজনৈতিক চাপ নয়, বরং বাস্তব চাহিদাই এই সিদ্ধান্ত নির্ধারণ করবে।প্রধানমন্ত্রী মোদি ট্রাম্পের দীপাবলি শুভেচ্ছার জবাবে সামাজিক মাধ্যমে বন্ধুত্বপূর্ণ সুরে ধন্যবাদ জানিয়েছেন, কিন্তু রুশ তেলের ইস্যুতে একেবারেই নীরব থেকেছেন। এই নীরবতাকে হাতিয়ার করে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছে সরকারের “স্বচ্ছতা” নিয়ে।কংগ্রেস নেতা জয়ারাম রমেশ বলেন,

“Mr. Modi conceals, Mr. Trump reveals.”
তিনি প্রশ্ন তোলেন— “এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নীরব কেন? কেন পররাষ্ট্র দপ্তরকে সামনে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে?”বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত বর্তমানে অত্যন্ত সূক্ষ্ম কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মাঝে রাশিয়া থেকে সস্তায় অপরিশোধিত তেল কিনে ভারত ভোক্তাদের স্বস্তি দিয়েছে, আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও জ্বালানি সহযোগিতা বাড়িয়েছে। এই দ্বিবিধ কূটনীতি ভারতের ‘স্ট্র্যাটেজিক অটোনমি’ বা কৌশলগত স্বাধীনতাকেই প্রতিফলিত করে।রুশ রাষ্ট্রদূত ডেনিস আলিপভ মন্তব্য করেছেন— ভারত তার স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এবং রুশ তেল ভারতের অর্থনীতির জন্য “গুরুত্বপূর্ণভাবে লাভজনক”।যদিও উৎসবের শুভেচ্ছা বিনিময়ে মোদি-ট্রাম্পের সৌহার্দ্যপূর্ণ বিনিময় জনসমক্ষে এসেছে, রুশ তেলকে ঘিরে সৃষ্ট এই সংশয় আসলে ভারতের বৃহত্তর কূটনৈতিক অবস্থান ও শক্তির রাজনীতির সূক্ষ্ম বাস্তবতাকেই সামনে এনে দিয়েছে।

Related posts

Leave a Comment