রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বুধবার বলেন, নতুন শিক্ষা নীতি (NEP) ভারতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে পুনরাবিষ্কার করার পাশাপাশি আধুনিকতার সেরা দিকগুলোকে একত্র করেছে। এটি ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সুন্দর সমন্বয় ঘটায়।
চেন্নাই থেকে ৩১৯ কিমি দূরে তিরুভারুর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “ভারতে আমাদের মহান প্রাচীন ঐতিহ্য রয়েছে যেখানে জ্ঞানকে কেবল জ্ঞানের জন্যই অনুসন্ধান করা হতো। আজকের ডিজিটাল যুগে ছাত্রছাত্রীরা অসংখ্য শিক্ষার উৎস পেয়েছে, যা পূর্ববর্তী কোনো প্রজন্মের কাছে সম্ভব ছিল না। এটাই নতুন শিক্ষা নীতির মূল, যেখানে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সেরা অংশ একত্রিত হয়েছে।”রাষ্ট্রপতির উপদেশ ছিল—শেখা চালিয়ে যাওয়া।
কারণ, ইন্টারনেট বিপ্লবের ফলে নতুন পেশা তৈরি হচ্ছে, এআই (AI) শিল্প বিপ্লব ৪.০-এর রূপ বদলাচ্ছে এবং কর্মসংস্কৃতিও পাল্টাচ্ছে। “এই পরিবর্তনশীল পরিবেশে যারা খাপ খাইয়ে নিতে পারে ও নতুন দক্ষতা অর্জন করতে পারে, তারাই পরিবর্তনের নেতা হবে।”তিনি বলেন, শিক্ষা কেবল ব্যক্তিগত উন্নয়নের জন্য নয়, সামাজিক উন্নয়নের সঙ্গেও যুক্ত হওয়া উচিত।
এ প্রসঙ্গে তিনি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এস রাধাকৃষ্ণনের উক্তি উদ্ধৃত করেন: “শিক্ষা কেবল সাক্ষরতা নয়; জ্ঞানও নয়; বরং প্রজ্ঞার বিকাশ, অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার ক্ষমতাই আসল শিক্ষা।”রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, শিক্ষা সমাজকল্যাণের দিকে পরিচালিত হওয়া উচিত। ছাত্রছাত্রীদের শিল্পক্ষেত্রের সঙ্গে মিলে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করার আহ্বান জানান—প্রকৃতি, পরিবেশ ও মানবতার বৃহত্তর মঙ্গলের জন্য।নিজের স্কুলশিক্ষক জীবনের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, “একবার শিক্ষক হলে সারাজীবন শিক্ষক।” তিনি উদাহরণ টানেন মহাত্মা গান্ধীর—যিনি সারা জীবন ছাত্র থেকে গেছেন, তামিল ও বাংলা শিখেছেন, গীতা অধ্যয়ন করেছেন, এমনকি জুতো বানানো ও চরকা কাটার মতো দক্ষতাও অর্জন করেছিলেন।
তিনি আরও আনন্দ প্রকাশ করেন যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিউনিটি কলেজ ও ডঃ আম্বেদকর সেন্টার অফ এক্সেলেন্সের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে অবদান রাখা হচ্ছে। বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, স্বর্ণপদকের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি জিতেছে মেয়েরা—যা সমাজের অন্তর্ভুক্তিমূলক অগ্রগতির প্রতীক।
শেষে রাষ্ট্রপতি ছাত্রছাত্রীদের স্মরণ করিয়ে দেন—“ভারতের নাগরিক হওয়া গৌরব ও আত্মবিশ্বাসের বিষয়। আজকের এই সাফল্যে সমাজও অবদান রেখেছে, তাই যাদের সহায়তা প্রয়োজন, তাদের সাহায্য করা তোমাদের দায়িত্ব।”