November 3, 2025
Featured

‘প্রণব শিশুতীর্থ’ সংবর্ধনা দিল ‘পদ্মশ্রী’ শ্রীমৎ স্বামী প্রদীপ্তানন্দ মহারাজকে

নিজস্ব চিত্র

মিলন খামারিয়া, কল্যাণী, ১০ এপ্রিল: ভারত সরকার দ্বারা ঘোষিত ‘পদ্মশ্রী’ সন্মান প্রাপক শ্রীমৎ স্বামী প্রদীপ্তানন্দ ওরফে কার্তিক মহারাজকে সংবর্ধনা দিল গয়েশপুরের ‘প্রণব শিশুতীর্থ’ বিদ্যালয়। গত ২৬ শে জানুয়ারী’২৫ তে ভারত সরকার স্বামীজীকে ‘আধ্যাত্মবাদ ও ধর্মসংস্কার’-এর জন্যে পদ্মশ্রী সন্মান প্রাপক হিসেবে নাম ঘোষণা করেছেন। প্রদীপ্তানন্দ মহারাজের পদ্মশ্রী সন্মান প্রাপ্তিতে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত।

তাই মহারাজকে বিশেষ সন্মান প্রদর্শনের জন্যে আজ নদীয়া জেলার গয়েশপুর পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত গয়েশপুর প্রণব শিশুতীর্থ বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে স্বামী প্রদীপ্তানন্দ মহারাজকে ধাতব মানপত্র, মহারাজের প্রতিকৃতি, দুর্গা মূর্তি, বুদ্ধমূর্তি ও পুষ্প স্তবক দিয়ে সন্মান জ্ঞাপন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মী, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক এবং বিদ্যালয়ের পৃষ্ঠপোষক অনেকে উপস্থিত হয়েছিলেন।

এই অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র নৃত্য পরিবেশন করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মৌমিতা রাউত এবং সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা স্বাতী পাল। এছাড়াও ছাত্র-ছাত্রী ও উপস্থিত অন্যান্য শিল্পীবৃন্দ অনুষ্ঠানে সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তি পরিবেশন ক’রে অনুষ্ঠানটিকে মনোজ্ঞ করেছেন।

বেলডাঙ্গা ‘ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ’ দ্বারা পরিচালিত নদীয়ার গয়েশপুরের এই প্রণব শিশুতীর্থ বিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শ্রীমৎ প্রদীপ্তানন্দ মহারাজ গত ২০১৯ সালে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। বিদ্যালয়ে বর্তমানে কেজি স্তর থেকে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা হয়। তিন তলা এই বিদ্যালয়ে বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ২৯৫ জন। বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা ১৪ ও ৫ জন শিক্ষাকর্মী কাজ করেন। বিদ্যালয়টি পুরোপুরি মহিলা পরিচালিত।

আজকের এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সচিব সুশান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, আমাদের এই রাজ্যের মাটি বিগত কয়েক হাজার বছর ধরে ধন্য হয়েছে বহু মহাপুরুষ ও মনীষীদের আবির্ভাবে। তাঁরা এই মাটিতে জন্ম নিয়ে আমাদেরকে ধন্য করেছেন। শ্রীমৎ স্বামী প্রদীপ্তানন্দ মহারাজ বিগত কয়েক দশক জুড়ে সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে যেভাবে দরিদ্র ও বঞ্চিত মানুষের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের উন্নতি এবং সেবা কাজ ক’রে চলেছেন, সেটা এই সময় এক বিরল দৃষ্টান্ত। গত কয়েক দশকে মানুষের আধ্যাত্মিক উন্নতি ও ধর্মসংস্কারের কাজে আমাদের রাজ্য তথা সারা ভারত জুড়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করেছেন তিনি। যুব সমাজ ও ছাত্রসমাজের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টির কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। তাই ওনার এই পদ্মশ্রী সম্মান প্রাপ্তি ওনার যোগ্য স্বীকৃতি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মৌমিতা রাউত বলেন, বিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বামী প্রদীপ্তানন্দ মহারাজের পদ্মশ্রী সন্মান প্রাপ্তি আমাদের বিদ্যালয় তথা রাজ্যের গর্ব। আজ আমরা আনন্দে সবাই একসাথে মিলে আমাদের পূজনীয় প্রদীপ্তানন্দ মহারাজকে শ্রদ্ধার সঙ্গে সন্মান জানাতে পেরে নিজেদের সন্মানিত বোধ করছি।

শ্রীমৎ প্রদীপ্তানন্দ মহারাজ বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার মধ্যে পারিবারিক মূল্যবোধ, মানবসেবা ও আধ্যাত্মিকতার প্রভাব যাতে থাকে তার ওপর জোর দিতে হবে। আমার জীবন আমি হিন্দু ধর্ম রক্ষা ও মানব সেবার জন্য ‘ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ’কে নিবেদন করেছি। তাই আমার কাছে মানব সেবাই শ্রেষ্ঠ পূজা।

বিদ্যালয়ের এই সুন্দর অনুষ্ঠানে উনি সংবর্ধিত হয়ে বিদ্যালয়ের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন। এই বিদ্যালয়ের ক্রমাগত সমৃদ্ধি ও উন্নতির জন্যে সকল শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী এবং অভিভাবকবৃন্দের প্রতি তিনি বিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। মহারাজ তার এই পদ্মশ্রী সন্মান প্রাপ্তির কৃতিত্ব ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রতি অর্পণ করেছেন।

Related posts

Leave a Comment