ঘাটাল, পশ্চিম মেদিনীপুর: কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ড্রেনের জল উপচে প্লাবিত এলাকা, হাঁটু সমান জল পেরিয়ে করতে হচ্ছে যাতায়াত।ড্রেনের নোংরা জল পৌঁছে যাচ্ছে বাড়ির দোরগোড়া অবধি, বাড়ছে মশা মাছির উপদ্রব তার উপর দুর্গন্ধে টিকা দায় ৬০-৬৫ টি পরিবারের। দীর্ঘ বছরের সমস্যা, জানিয়েও সুরাহা হয়নি দাবি বাসিন্দাদের। দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে বাসিন্দাদের ঘাড়ে দায় চাপিয়েছে স্থানীয় কাউন্সিলর থেকে চেয়ারম্যান। এদিকে এই ঘটনায় তরজায় তৃণমূল-বিজেপি।
এঘটনা কোনো নদীতীরবর্তী এলাকার নই, বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার জেরে এই বর্ষায় গ্রামের ওলিগুলির রাস্তা ড্রেনের জল উপচে প্লাবিত, হাঁটু সমান জল পেরিয়ে চলছে যাতায়াত। এমনই চরম ভোগান্তির শিকার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ক্ষীরপাই পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড হালদারদিঘি মোড় এলাকার ৬০-৬৫ টি পরিবারের।জানাযায়, হালদারদিঘি মোড়ে ৪ নম্বর রাজ্যসড়কের ধারে বসবাস ৬০-৬৫ টি পরিবারের। পরিবারগুলির অভিযোগ, দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে এলাকায় থাকা পৌরসভার ড্রেনটি নোংরা আবর্জনায় বুঝে রয়েছে।যার জেরে বৃষ্টি হলেই ড্রেনের জল উপচে যাতায়াতের রাস্তায় চলে আসে, পাশাপাশি ড্রেনের নোংরা জল বাসিন্দাদের একদম বাড়ির দোরগোড়ায় এসে জমা হয়ে থাকে। বেশ কয়েকদিন ধরেই বৃষ্টি হচ্ছে, বর্ষার বৃষ্টির জেরে বর্তমানে ড্রেনের নোংরা জল উপচে প্লাবিত যাতায়াতের রাস্তা, আট থেকে আশি সকলকেই হাঁটু সমান জল পেরিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এছাড়াও বেহাল নিকাশির জেরে ড্রেনের নোংরা জল বাসিন্দাদের বাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে, এতে চরম ভোগান্তির শিকার তারা এমনই অভিযোগ তাদের।
এনিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর থেকে পৌরসভা, বারবার জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি, খালি মাঝে মধ্যে পৌরসভা থেকে লোকজন এসে দেখে চলে গিয়েছে। বর্তমানে বৃষ্টির জেরে ড্রেনের নোংরা জল ওই এলাকায় ওলিতে গলিতে ঢুকে একপ্রকার জলবন্দি অবস্থা তৈরি হয়েছে। বাড়ি থেকে বেরিয়েই নোংরা জল মাড়িয়ে বাজারহাট সহ নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে বের হতে হচ্ছে। এছাড়াও ড্রেনের নোংরা জল বাড়ির দোরগোড়ায় জমে থাকায় দুর্গন্ধে টিকা দায়, সাথে বাড়ছে মশা মাছির উপদ্রব।দ্রত বুজে যাওয়া ড্রেন পরিষ্কার করে যাতে সুষ্ঠ ভাবে জল নিকাশ হয় তার ব্যবস্থা করুক পৌরসভা দাবি বাসিন্দাদের। যদিও এবিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর থেকে পৌরসভার চেয়ারম্যান, দুজনেই সমস্যার দায়ভার চাপিয়েছেন বাসিন্দাদের ঘাড়েই। বাড়ি করার সময় নিয়ম মেনে জায়গা না ছাড়ায় যাতায়াতের পর্যাপ্ত রাস্তার অভাব ও নোংরা আবর্জনা প্লাস্টিক ফেলে ড্রেন বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি কাউন্সিলর সহ পুর চেয়ারম্যানের। তবে ওই এলাকায় কাজের জন্য কোনো শ্রমিক মিলছে না, দ্রুত চেষ্টা করা হবে মজে যাওয়া ড্রেনটি পরিষ্কার করার এমনই আশ্বাস ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পাপিয়া রায় ও ক্ষীরপাই পৌরসভার চেয়ারম্যান দূর্গাশঙ্কর পানের।
আর এঘটনা হাতিয়ার করে তৃণমূল পরিচালিত পৌরসভা ও তৃণমূল কাউন্সিলরকে আক্রমণ জানিয়েছে বিজেপি। বিজেপির দাবি, ওই এলাকাটি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত, সমস্যা দীর্ঘদিনের।কিন্তু পৌরসভা কোনো উদ্যোগ নেয়নি, ফলে এই বর্ষায় পরিবারগুলিকে ভুগতে হচ্ছে। তৃণমূল সরকার সংখ্যালঘু দরদী বলে নিজেদের দেখায় কিন্তু ক্ষীরপাই পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের হালদারদিঘি মোড়ে সংখ্যালঘু পরিবারগুলির দীর্ঘ দিনের সমস্যা নিয়ে উদাসীন কেনো পৌরসভা? প্রশ্ন তুলছে বিজেপি, সাথে বিজেপির তরফে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে বড়সড় আন্দোলনে যাওয়ার।বিজেপিকে পাল্টা জবাব দিয়েছে শাসকদল তৃণমূল।ক্ষীরপাই শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি তারক নাথ মন্ডল জানান, গোটা রাজ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উন্নয়ন হচ্ছে বিজেপির এটা হজম হচ্ছে না। সামনে নির্বাচন ওরা যাহোক নিয়ে মিথ্যা রটাচ্ছে। যে সমস্যার কথা বলা হচ্ছে ওয়ার্ডের নেতৃত্বদের থেকে জেনে পৌরসভার সাথে কথা বলে দ্রুত মিটিয়ে দেওয়া হবে। “দীর্ঘ কয়েকবছরের নিকাশি সমস্যা, বর্ষার শুরুতেই এমন বেহাল অবস্থা হলে ভরা বর্ষায় কি পরিস্থিতি হবে তা ভেবেই দুঃশ্চিন্তা বাড়ছে বাসিন্দাদের।
next post