নববর্ষ রাজনীতি। বছর ঘুরলে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। শাসক, বিরোধী দ্বৈরথ নয়, বাঙালি বনাম বগিরাগত লড়াই। রামনবমী, হনুমান জয়ন্তী পালন করে যে ধর্মীয় আবেগ তৈরির চেষ্টা করেছিল পদ্মশিবির, তাতে তেমন বেশি সাফল্য আসেনি। বরং জুটেছে বহিরাগত তকমা। সেই তকমা ঘোচাতে পয়লা বৈশাখকে হাতিয়ার করতে চাইছে বঙ্গ বিজেপি। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, বঙ্গে এবার ঘটা করে নববর্ষ উদযাপন করবে পদ্মশিবির।
নববর্ষের দিনটিকে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের তরফেও একাধিক কর্মসূচি রয়েছে। শাসক দলের সঙ্গে পাল্লা দিতে এবার পথে নামছে বঙ্গ বিজেপিও। সম্প্রতি রামনবমী নিয়ে বিজেপির মিছিল শোভাযাত্রার পর রাজনৈতিক সমালোচকেরা দাবি করেছিল, বাংলার সংস্কৃতি নয়, এমন বিষয়কে বাংলায় আনা হচ্ছে। আবার দিল্লির বাঙালি অধ্যুষিত চিত্তরঞ্জন পার্কের মাছ বাজার নবরাত্রির নামে বন্ধ রাখার অভিযোগে অস্বস্তিতে বিজেপি। সব মিলিয়েই ভোটের আগে বাংলায় নিজেদের প্রভাব তৈরি করতেই নববর্ষকে গুরুত্ব দিতে চাইছে বিজেপি।
সূত্রের খবর, বিজেপির তরফে ইতিমধ্যেই মণ্ডল স্তরে নির্দেশিকা পাঠিয়ে নববর্ষ পালন বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা করা হয়েছে। নববর্ষের সকালে প্রভাতফেরি করতে হবে। সন্ধ্যায় বুথে বুথে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পথ নাটিকা-সহ বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একাধিক কর্মসূচি পালনেই নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে।
বাংলার হিন্দু জাগরণের প্রতীক হিসাবে মহারাজ শশাঙ্ককে সামনে রেখে প্রচার শুরু করছে বিজেপি। বঙ্গাব্দ গণনার প্রবর্তক কে? এ নিয়ে দ্বিমত আছে ইতিহাসবিদদের। কেউ বলেন শশাঙ্ক, কেউ বলেন আকবর। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে আরএসএসের একাংশ বাংলায় জোরের সঙ্গে প্রচার করেছে বঙ্গাব্দের সূচনা করেছেন শশাঙ্কই। শোনা যাচ্ছে, পয়লা বৈশাখে শশাঙ্ককে নিয়ে শোভাযাত্রা বের করতে চাইছে বঙ্গ বিজেপি। মোটকথা, বিধানসভা ভোটার আগে বহিরাগত তকমা পদ্মশিবির। অঙ্গ, কলিঙ্গ জয়ের পর বঙ্গে সিংহাসন দখলে মরিয়া বিজেপি নেতৃত্ব। সেকারণেই এত আয়োজন, মূল রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।