রিলায়েন্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ধীরুভাই আম্বানির ৯১ বছর বয়সী স্ত্রী ও মুকেশ-অনীল আম্বানির মা কোকিলাবেন আম্বানিকে শুক্রবার সকালে এয়ারলিফট করে মুম্বাইয়ের এইচএন রিলায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দক্ষিণ মুম্বাইয়ের হাসপাতালে আম্বানি পরিবারের কনভয় পৌঁছাতেই তাঁর স্বাস্থ্যের বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়।
তবে চিকিৎসকরা তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে কিছু জানায়নি এবং রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজও এ বিষয়ে কোনো সরকারি বিবৃতি প্রকাশ করেনি। হাসপাতালে ভর্তির কিছুক্ষণের মধ্যেই রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি মুম্বাইয়ের কালিনা বিমানবন্দরে দেখা দেন এবং সরাসরি হাসপাতালে যান। ১৯৩৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি গুজরাটের জামনগরে জন্মগ্রহণ করা কোকিলাবেন ১৯৫৫ সালে ধীরুভাই আম্বানিকে বিয়ে করেন এবং সেই থেকে ভারতের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী পরিবারের কেন্দ্রে রয়েছেন।
তাঁর চার সন্তান হলেন— মুকেশ আম্বানি (রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান), অনীল আম্বানি (রিলায়েন্স এডিএ গ্রুপের চেয়ারম্যান), নীনা কোঠারি ও দীপ্তি সালগাঁওকার। যদিও কোকিলাবেন সরাসরি রিলায়েন্সের দৈনন্দিন কার্যক্রমে যুক্ত নন, তিনি পরিবারে অন্যতম প্রভাবশালী শক্তি। আম্বানি পরিবার সম্মিলিতভাবে রিলায়েন্সের প্রায় অর্ধেক শেয়ারের মালিক (৫০.৩৯%)। বাকি শেয়ার (৪৯.৬১%) রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে, যার মধ্যে বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও আছেন।
বর্তমানে কোকিলাবেন আম্বানির ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ আনুমানিক ১৮ হাজার কোটি টাকা। তিনি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজে ১.৫৭ কোটিরও বেশি শেয়ারের মালিক, যা কোম্পানির মোট ইকুইটির প্রায় ০.২৪%। এর ফলে তিনি আম্বানি পরিবারের মধ্যে রিলায়েন্সের সর্বাধিক ব্যক্তিগত শেয়ার হোল্ডার। তুলনায় মুকেশ আম্বানি কোম্পানির মাত্র ০.১২% শেয়ারের মালিক। ২০০২ সালে ধীরুভাই আম্বানির মৃত্যুর পর কোকিলাবেন তাঁর দুই ছেলের মধ্যে রিলায়েন্স সাম্রাজ্যের ভাগাভাগি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং পারিবারিক দ্বন্দ্ব প্রশমিত করতে সহায়তা করেন।
কোকিলাবেন দীর্ঘদিন ধরে সমাজকল্যাণমূলক কাজ, দাতব্য উদ্যোগ ও স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে যুক্ত। মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতাল তাঁর সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত, যা দেশের অন্যতম প্রধান বহুমুখী বিশেষায়িত চিকিৎসা কেন্দ্র।
