কলকাতা, ২৫ অগস্ট, ২০২৫ — প্রখ্যাত বাংলা চলচ্চিত্র অভিনেতা ও বিজেপি নেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। গত ১৫ অগস্ট থেকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
অভিনেতার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবার, চলচ্চিত্র মহল, রাজনৈতিক অঙ্গন ও ভক্তদের মধ্যে। তবে যিনি নীরবে তাঁর পাশে ছিলেন শেষ দিন পর্যন্ত, তিনি হলেন প্রাক্তন স্ত্রী অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কে এই অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়?
অনন্যা বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র। পাশাপাশি তিনি একজন সমাজকর্মী ও উদ্যোক্তা। ব্যস্ত কর্মসূচির মাঝেই তিনি নিয়মিত সামাজিক কাজকর্মের ঝলক শেয়ার করেন ইউটিউব ও ইনস্টাগ্রামে। জয়ের সঙ্গে বিচ্ছেদ হলেও তিনি আর কখনও বিয়ে করেননি এবং প্রাক্তন স্বামীর পরিবারকেও দেখাশোনা করেছেন প্রায়শই।
ভাঙনের কারণ রাজনীতি
রাজনীতিই তাদের দাম্পত্যে ভাঙন ডেকে আনে। ২০১৪ সালে জয় যোগ দেন বিজেপি-তে, আর অনন্যা ২০০৯ সাল থেকেই সক্রিয় তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী। অনন্যার পরিবারও রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় — তাঁর ঠাকুরদা একসময় কংগ্রেসের টিকিটে কালনা (বর্ধমান) থেকে বিধানসভা নির্বাচন লড়েছিলেন।
২০২০ সালে এক সাক্ষাৎকারে জয় আক্ষেপ করে বলেছিলেন:
“রাজনীতির জন্য কারও সংসার ভাঙা উচিত নয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমার জীবনেও একদিন সেই ঝড় নেমেছিল।”
কলেজজীবনের প্রেম
অনন্যা এক সাক্ষাৎকারে জানান, কলেজে পড়ার সময় থেকেই তিনি জয়ের ভক্ত ছিলেন। রক্ষণশীল পরিবেশে বড় হওয়া সত্ত্বেও জয়ের সরলতা ও মাটির কাছাকাছি স্বভাব তাঁকে টেনে নিয়েছিল। সেলিব্রিটি হওয়া সত্ত্বেও জয় কখনও সাফল্য নিয়ে অহংকার করেননি। অনন্যার কথায়, “তিনি এমন একজন মানুষ ছিলেন যিনি কথার জাদুতে কাউকে সহজেই মুগ্ধ করতে পারতেন।”
শেষ দিনগুলিতে পাশে অনন্যা
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে নিয়মিত জয়ের খোঁজ নিয়েছেন অনন্যা। পরিবার ও বিশেষ করে জয়ের মায়ের পাশে থেকেছেন তিনি। অভিনেতার মৃত্যুতে ভেঙে পড়ে অনন্যা বলেন:
“অনেকদিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। সামান্য কথা বললেও শ্বাসকষ্ট হত। তবু আমি ভেবেছিলাম উনি আবার ফিরে আসবেন। তাঁর মধ্যে ছিল এক অদম্য প্রাণশক্তি।”
তিনি আরও জানান, আগেও দুর্গাপুজোর সময় বাবাকে হারিয়েছিলেন। এবার পুজোর আগেই চলে গেলেন প্রাক্তন স্বামী। ফলে উৎসবের মৌসুম আর তাঁর কাছে আগের মতো নেই।
next post
