September 3, 2025
দেশ

চিনা সংস্থার সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে ভারত? মোদী-জিনপিং বৈঠকের পর বদলাচ্ছে চিত্র

চিনের সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম তৈরির সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে ভারতে। সূত্রের খবর, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক কিছুটা নরম হওয়ার ইঙ্গিত মিলছে।

বয়কট থেকে সহযোগিতা?
লাদাখ সংঘাতের পর থেকেই ভারতে চিনা পণ্য বয়কটের ডাক জোরদার হয়েছিল। মোবাইল অ্যাপ নিষিদ্ধ থেকে শুরু করে টেন্ডারে চিনা কোম্পানির প্রবেশে বাধা—সব জায়গাতেই কড়া অবস্থান নিয়েছিল কেন্দ্র। তবে সাম্প্রতিক আলোচনার পরে মনে করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে চিনের দক্ষতা কাজে লাগাতে চাইছে ভারত।

কেন এই পরিবর্তন?

  • ভারতের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎচাহিদা পূরণে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োজন।
  • উৎপাদন বাড়িয়ে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পকে গতি দিতে বিদেশি বিনিয়োগ অপরিহার্য।
  • বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ক্ষেত্রে চিনা সংস্থাগুলির অভিজ্ঞতা ভারতের শিল্পক্ষেত্রে কাজে লাগতে পারে।

রাজনৈতিক ইঙ্গিত
এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে কিছু জানানো না হলেও বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে বলে ইঙ্গিত দেয়। তবে বিরোধী দলগুলির প্রশ্ন— এতদিনের বয়কট-নীতি কি তবে ভেস্তে গেল?

প্রসঙ্গত, ভারত-চিন সম্পর্কের টানাপোড়েনের সময় দেশে চিনা পণ্যের বিরুদ্ধে বয়কটের ডাক উঠেছিল। কিন্তু সম্প্রতি তিয়ানজিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে নতুন করে ব্যবসায়িক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের সংস্থাগুলি এখন চিনা কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বৈদ্যুতিক সামগ্রী তৈরির সম্ভাবনা খুঁজছে। এতে স্থানীয় উৎপাদকরা আশাবাদী, পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগও বাড়তে পারে।

মার্কিন শুল্কনীতি প্রভাব ফেলছে
রাশিয়া থেকে তেল কেনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমেরিকা ভারতের অধিকাংশ পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক বসিয়েছে। তবে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের উপর এই শুল্কছাড় থাকায়, উৎপাদন বৃদ্ধি হলে ভারত তা মার্কিন বাজারেও রফতানি করতে পারবে। যদিও চিনা অংশীদারিত্ব থাকলে পণ্যের গুণগত মান নিয়ে ওয়াশিংটনের আপত্তি উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

কূটনৈতিক বার্তা
এসসিও বৈঠকের ফাঁকে মোদী-জিনপিংয়ের দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় দুই নেতা দ্বন্দ্ব ভুলে সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে একমত হয়েছেন। আলোচনায় দুষ্প্রাপ্য খনিজ, সার এবং সুড়ঙ্গ খননের যন্ত্র ভারতে রফতানির আশ্বাস দিয়েছে চিন।

শিল্পক্ষেত্রে সম্ভাবনা
স্থানীয় উৎপাদকদের মতে, এই সহযোগিতা বাস্তবায়িত হলে শুধু রফতানি নয়, ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারেও বৈদ্যুতিক সামগ্রীর যোগান বাড়বে। যদিও চিনা পণ্যের মান নিয়ে আগেও প্রশ্ন উঠেছে, তবু সস্তা দাম এবং বৈচিত্র্য তাদের জনপ্রিয় রেখেছে।
২০২০ সালের লাদাখ সংঘাতের পর বয়কটের ডাক দেওয়া হলেও চিনা পণ্য বাজার থেকে পুরোপুরি উধাও হয়নি। ফলে মোদী-জিনপিংয়ের নতুন উদ্যোগে দুই দেশের ব্যবসায়িক সম্পর্ক কতটা বদলাবে, তা নিয়ে এখন চোখ বিনিয়োগকারী ও শিল্পমহলের।

Related posts

Leave a Comment