November 1, 2025
দেশ

গ্লোবাল সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে ভারত: বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে আবির্ভাব

বিশ্বের সেমিকন্ডাক্টর শিল্প, যেখানে তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ রয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ১ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে অনুমান। এই প্রসঙ্গে ভারত বিশ্বব্যাপী চিপ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে এগিয়ে আসছে। স্মার্টফোন থেকে স্যাটেলাইট পর্যন্ত যন্ত্রের “মস্তিষ্ক” হিসেবে চিপগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সরকারি অনুমানের অনুযায়ী, ভারতের ঘরোয়া বাজার ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০–১১০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে।প্রতিদিনের ব্যবহৃত চিপের প্রায় ৬০ শতাংশ উৎপাদন তাইওয়ানে এবং সবচেয়ে উন্নত চিপের ৯০ শতাংশও সেখানেই তৈরি হয়।ভারত, যা আগে মূলত চিপ ডিজাইন ও প্যাকেজিং-এ মনোনিবেশ করেছিল, কোভিড-১৯ মহামারীর সময় চিপের ঘাটতির পর উৎপাদনের দিকে এগোতে শুরু করে। চার বছরের মধ্যে দেশটি শক্তিশালী উৎপাদন ইকোসিস্টেম তৈরি করছে।কেন্দ্রের ইলেকট্রনিক্স ও আইটি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব উল্লেখ করেছেন, ভারতের দক্ষ প্রতিভা অনেকগুলো বৈশ্বিক চিপ ডিজাইন কোম্পানিকে আকৃষ্ট করছে।

তিনি বলেন, “আমরা সম্পূর্ণ সেমিকন্ডাক্টর স্ট্যাক তৈরি করছি—চিপ ডিজাইন, উৎপাদন, যন্ত্রপাতি ও উপকরণ এবং প্রতিভা উন্নয়ন। অগ্রগতি অনেক ভালো এবং এটি কেবল শুরু।”সেমিকন্ডাক্টর মিশনের অধীনে, দেশজুড়ে ২৭৮টি বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠান সাপোর্ট পাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা এখন বিশ্বের সর্বশেষ EDA টুলস ব্যবহার করে চিপ ডিজাইন শিখছে। ইতিমধ্যে ২৮টি চিপ শিক্ষার্থীরা ডিজাইন করেছে, যা বৈশ্বিক কোম্পানির ভরসা প্রতিফলিত করে।সেমিকন্ডাক্টরগুলো আধুনিক ইলেকট্রনিক্সের মূল উপাদান, যেগুলো যন্ত্রের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিটি চিপে রয়েছে মিলিয়ন বা বিলিয়ন ট্রানজিস্টর, যা বিদ্যুৎ সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করে।

পাতলা চিপ বেশি প্রসেসিং ক্ষমতা দেয়, এবং ছোট ট্রানজিস্টর ক্ষমতা খরচ কমায় ও দক্ষতা বাড়ায়।ভারতের পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথমবারের মতো ২ এনএম চিপ উৎপাদন করা হবে, যা এআই, মোবাইল কম্পিউটিং ও উচ্চ ক্ষমতার সিস্টেমকে সহায়তা করবে।ইন্ডিয়া সেমিকন্ডাক্টর মিশন-এর অধীনে ছয় রাজ্যে ১০টি অনুমোদিত প্রকল্প রয়েছে, মোট বিনিয়োগ ১.৬ লক্ষ কোটি টাকা, এবং মিশনের মোট বাজেট ৭৬,০০০ কোটি টাকা।এই মিশনের মাধ্যমে ভারত ‘আত্মনির্ভর ভারত’ উদ্যোগকে শক্তিশালী করছে এবং বিশ্ব সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে নেতৃত্বের লক্ষ্য অর্জনের পথে এগোচ্ছে।

Related posts

Leave a Comment