হুগলি: পুরীর পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং অন্যতম প্রাচীন রথযাত্রার সাক্ষী থাকবে হুগলির শ্রীরামপুরের মাহেশ। ২৭ জুন মহাধুমধামে পালিত হবে ৬২৯ বছরের পুরনো এই রথযাত্রা। লক্ষ লক্ষ ভক্তের আগমন ঘিরে প্রশাসন ও মন্দির কমিটি নিরাপত্তা, ট্রাফিক, বিদ্যুৎ এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে।আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে মহেশে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি সুসজ্জিত রথে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ‘মাসির বাড়ি’।
এই যাত্রাকে ঘিরে শ্রীরামপুরের রাস্তায় জনস্রোত উপচে পড়ে। সেই ভিড় সামলাতে পুলিশের পাশাপাশি দমকল, বিদ্যুৎ এবং স্বাস্থ্য দফতর ইতিমধ্যেই রথপথ পরিদর্শন করেছে।রথযাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে শুরু হয়েছে রথপথের গাছপালা ছাঁটাই ও অবৈধ দখল সরানোর কাজ। রাস্তার দুই ধারের অস্থায়ী দোকানও আপাতত সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে যাতে রথ চলাচলে কোনও বাধা না আসে।
মাহেশের রথযাত্রার সূচনা ১৩৯৬ খ্রিস্টাব্দে। কথিত আছে, এক পর্তুগিজ ব্যবসায়ী এই রথযাত্রা শুরু করেন। পরে হুগলির তৎকালীন দেওয়ান কৃষ্ণরাম বসু নতুন রথ তৈরি করে এই উৎসবের নব রূপ দেন।প্রতি বছর রথ উপলক্ষে মাহেশে মাসব্যাপী মেলা বসে। শুধু বাংলার নানা প্রান্ত নয়, দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকেও পুণ্যার্থীরা এখানে আসেন। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর উপন্যাস ‘রাধারাণী’ তে এই রথযাত্রার উল্লেখ করেছিলেন, যা মাহেশের মাহাত্ম্য আরও বাড়িয়ে দেয়।
এই বছরের রথযাত্রাও একই উৎসাহ ও শ্রদ্ধার আবহে হতে চলেছে। ‘রথ টানার’ জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ভক্তরা। প্রশাসনের লক্ষ্য— এই ঐতিহাসিক রথযাত্রা হোক নির্বিঘ্ন, শান্তিপূর্ণ ও স্মরণীয়।