28 C
Kolkata
June 16, 2025
Featured

দেশে যোগ্য প্রার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি চাকরি নেই: সুপ্রিম কোর্ট

ফাইল চিত্র

দেশে যোগ্য প্রার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি চাকরি নেই। স্বাধীনতার পর  ৮০ বছর কেটে গেলেও এই দীর্ঘ সময়ে যোগ্য প্রার্থীদের জন্য যথেষ্ট সংখ্যক সরকারি চাকরির বন্দোবস্ত করা যায়নি। লক্ষ্যপূরণে ব্যর্থ হয়েছি আমরা।  এমনই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। শীর্ষ আদালতের মতে, সুযোগ খুব কম থাকায় চাকরির যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বহু প্রার্থী সরকারি চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাঁদের কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি মনমোহনের বেঞ্চ এই মত প্রকাশ করে।

সরকারি চাকরির অভাবের কথা তুলে ধরে আক্ষেপ প্রকাশ করল দেশের শীর্ষ আদালত। এক পর্যবেক্ষণে আক্ষেপ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, স্বাধীনতা পাওয়ার পর প্রায় ৮০ বছরের পথ পাড়ি দিয়েছি আমরা। কিন্তু, এতদিনেও যাঁরা সরকারি চাকরি করতে চান, তাঁদের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি চাকরির সংস্থান করতে পারিনি আমরা। অথচ, দেশে যোগ্য প্রার্থীর কোনও অভাব নেই। যোগ্য প্রার্থীদের একটি সরকারি চাকরি পাওয়ার আশায় এক দীর্ঘ সারিতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। পর্যাপ্ত সংখ্যক চাকরি না থাকায় তাঁরা অপেক্ষার দিন গুনছেন।

বিহারের একটি মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত পাটনা হাইকোর্টের পূর্ববর্তী রায় বহাল রাখে। এই মামলায় পাটনা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারের একটি বিধিকে অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছিল। বিহারে নিয়ম ছিল সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ‘চৌকিদার’ পদটি বংশানুক্রমিক ভাবে চালু থাকবে। কিন্তু পাটনা উচ্চ আদালত জানায় এই প্রথার কোনও সাংবিধানিক মান্যতা নেই।

প্রসঙ্গত, বিহার চৌকিদার ক্যাডার সংশোধনী বিধি, ২০১৪-তে বলা হয়েছে, কোনও ‘চৌকিদার’ পদের কর্মী যখন অবসর নেবেন, তখন তাঁর উপর নির্ভরশীল কোনও উত্তরাধিকারীকে তিনি মনোনীত করতে পারেন। সেই উত্তরাধিকারী অবসর নিতে চলা কর্মীর জায়গায় উক্ত পদের জন্য সরকারি চাকরিটি পাবেন। পাটনা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই বিধিকে অসাংবিধানিক বলে জানায়। আদালত তার রায়ে জানায়, এই বিধি সংবিধানের সাম্যের অধিকার এবং সরকারি চাকরিতে সমান সুযোগের অধিকারকে ভঙ্গ করে।

পাটনা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই বিধিকে সংবিধানের ১৪ এবং ১৬ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন বলে এটিকে বাতিল করে দেয়।  হাইকোর্টের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে বিহার রাজ্য দফাদার চৌকিদার পঞ্চায়েত বিভাগ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় এই যুক্তি দিয়ে যে, হাইকোর্ট তার এক্তিয়ার লঙ্ঘন করে বংশগতির নিয়মের সাংবিধানিকতাকে আদালতে চ্যালেঞ্জ না করা সত্ত্বেও এই নিয়মকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে।  

বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি মনমোহন সিং-এর বেঞ্চ পাটনা হাইকোর্টের সেই রায় বহাল রাখে। এখানে রাজ্য সরকারের চৌকিদার পদে বংশগতভাবে সরকারি নিয়োগের অনুমতি দেওয়া আইনটিকে অসাংবিধানিক বলে বাতিল করে দেওয়া হয়।

এই প্রসঙ্গে, মনজিৎ বনাম ভারত ইউনিয়ন, ২০২১ এবং চিফ পার্সোনেল অফিসার, দক্ষিণ রেলওয়ে বনাম নিশান্ত জর্জ, ২০২২ মামলাগুলির উল্লেখ করা হয়েছিল, যেখানে আদালত অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের সন্তানদের চাকরি পাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য একটি রেলওয়ে প্রকল্পকে বাতিল করে দিয়েছিল। এটিকে ‘পিছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ’ এবং সংবিধানের ১৪ এবং ১৬ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করা হয়।

Related posts

Leave a Comment