November 1, 2025
রাজ্য

নাটকীয় দৃশ্য, ফের ধরা পড়লেন তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা

ফাইল চিত্র

সোমবার ভোর। মুর্শিদাবাদের কান্দির আন্দি গ্রামে টহলরত গাড়ি থামতেই এলাকায় চাঞ্চল্য। কয়েক মিনিটের মধ্যেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা প্রবেশ করলেন তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে। সূত্রের দাবি, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তেই এদিন নাম ওঠে তাঁর।

পালানোর চেষ্টা, মোবাইল ফেলে ধরা
ঘটনার সাক্ষী স্থানীয়রা বলছেন, হঠাৎই বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে পালাতে উদ্যত হন বিধায়ক। কয়েকজন আধিকারিক ততক্ষণে তাঁকে ঘিরে ফেলেছেন। ধাওয়া করে তাঁকে ফিরিয়ে আনা হয় ঘরের ভেতরে। এর মধ্যেই নিজের ফোন বাইরে ছুঁড়ে ফেলেন তিনি। পরে বাড়ির পিছনের নর্দমার ঝোপ থেকে সেটি উদ্ধার করে ইডি। অভিযোগ, পাসওয়ার্ড চাইলে কিছুতেই দিতে চাননি জীবনকৃষ্ণ।

অতীতের ছায়া
এ দৃশ্য যেন নতুন নয়। ২০২৩ সালের এপ্রিলেও কেন্দ্রীয় সংস্থার তল্লাশির সময় একই কায়দায় দুটি ফোন পুকুরে ফেলে দেন জীবনকৃষ্ণ। তখন ডুবুরি নামিয়ে ফোন উদ্ধার হয়েছিল, যদিও তেমন তথ্য মেলেনি। সে সময় তিনি প্রায় ১৩ মাস কারাগারে ছিলেন। পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জামিনে মুক্তি পান। শর্ত ছিল তদন্তে সহযোগিতা করবেন। কিন্তু এদিন ফের অসহযোগিতার অভিযোগ উঠল।

তল্লাশির পরিধি
একসঙ্গে একাধিক জায়গায় অভিযান চালানো হয়। রঘুনাথগঞ্জে জীবনকৃষ্ণের শ্বশুরবাড়ি, আন্দি মহীষ গ্রামে এক ব্যাঙ্ক কর্মীর বাড়ি, বীরভূমের সাঁইথিয়ায় তাঁর আত্মীয়া মায়া সাহার বাড়ি—সব জায়গাতেই সকাল থেকে তল্লাশি চলে। একইসঙ্গে পুরুলিয়ায়ও পৌঁছয় ইডির আরেক দল। সেখানকার লক্ষ্য ছিল প্রসন্ন রায়ের শ্বশুরবাড়ি। প্রসন্ন এখন জেলে, কিন্তু তাঁর মাধ্যমে এসএসসি নিয়োগে বড় অনিয়ম হয়েছে বলেই অভিযোগ।

রাজনৈতিক তরঙ্গ
একাধিক বার গ্রেফতার হওয়া, মোবাইল ফেলে দেওয়ার পুনরাবৃত্তি—সব মিলিয়ে জীবনকৃষ্ণ সাহাকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র চর্চা শুরু হয়েছে। ইডির দাবি, তিনি ইচ্ছে করে প্রমাণ নষ্ট করছেন। বিরোধীদের প্রশ্ন, তৃণমূল কি তবে এই দুর্নীতির অভিযোগ থেকে আরও বিপদে পড়ল? তবে শাসকদলের একাংশের বক্তব্য—“আইন আইনের পথেই চলবে, এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই।”

Related posts

Leave a Comment