30 C
Kolkata
June 16, 2025
রাজ্য

বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলেছেন দিলীপ ঘোষ, বিজেপিতে শুভেচ্ছার বন্যা

পাত্র দিলীপ ঘোষ ও পাত্র রিঙ্কু মজুমদার। ফাইল চিত্র

গরুর দুধে সোনা পাওয়া না গেলেও বিবাহিত জীবনে ভাবী স্ত্রীর কাছে শান্তির পথ খুঁজে পেয়েছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেজন্য বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলেছেন প্রাক্তন সাংসদ ও বিধায়ক। শুক্রবার ছাদনাতলায় মালাবদল হবে রিঙ্কু মজুমদারের সঙ্গে। এদিন তাঁর নিউ টাউনের বাড়িতেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কথা। তবে বিয়েতে তিনি বেশি আড়ম্বর করছেন না। নিজের আত্মীয় পরিজন এবং রিঙ্কুর আত্মীয় পরিজনরা থাকবেন এই বিয়েতে। আপাতত রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করলেও বিয়ের ভোজের অনুষ্ঠান ঠিক কবে হবে, তার অপেক্ষায় আছেন দিলীপের প্রিয়জনেরা।

প্রসঙ্গত সঙ্ঘের প্রচারক হওয়াই সকলে ধরেই নিয়েছিলেন ষাটোর্ধ দিলীপ ঘোষ আজীবন অকৃতদার থেকে যাবেন। তবে তাঁর মনে কবে যে বিয়ের পদ্মফুল ফুটেছে, তা বিজেপির দলের অনেকেই খবর রাখেন না। ফলে ৬১ বছর বয়সে ৫১-র রিঙ্কুকে বিয়ের খবর চাউর হতেই হট কেকের মতো রাজনৈতিক মহলে যথেষ্ট গুঞ্জন ছড়িয়েছে। পাড়ায় পাড়ায় চায়ের দোকানে হাসির হিল্লোল উঠেছে। খবর শুনেই অনেকে দিয়েছেন দমফাটা হাসি!

অনেকে বলছেন, দিলীপ বাবুর সঙ্গে অনেকদিন ধরে নাকি প্রেম পর্ব চলছিল রিঙ্কু মজুমদারের। রিঙ্কু নিজেও দলের একজন নেত্রী। সেই সুবাদে দুজনের সঙ্গে পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। জানা গিয়েছে, রিংকুর সঙ্গে দিলীপের প্রথম দেখা হয়েছে ইকো পার্কে মর্নিং ওয়ার্কের সময়। সেই থেকে দুজনের যোগাযোগ এবং ভাব ভালোবাসা, যার শেষ পরিণতি বিয়ের পিঁড়ি পর্যন্ত গড়াতে চলেছে।

দিলীপের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত লোকসভা ভোটে পরাজয়ের পর একেবারে ভেঙে পড়েন দিলীপ বাবু। সেই সময় তাঁকে সঙ্গ দেন রিঙ্কু। তাঁর পাশে থেকে প্রতি মুহূর্তে মনে ভরসা জুগিয়েছেন প্রেমিকা রিঙ্কু মজুমদার। এই সময়ে রিঙ্কুই দিলীপ বাবুকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। বিবাহ বিচ্ছিন্না রিঙ্কু দিলীপকে বলেন, যেহেতু তিনি একা, সেজন্য তিনি দিলীপের সঙ্গে থাকতে চান। সেই প্রস্তাবে প্রথমে রাজি না হলেও পরে দিলীপবাবু তাঁর মায়ের জোরাজরিতে সুন্দরী রিঙ্কুকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যান।

গত ৩ এপ্রিল ইডেনে দুজনে আইপিএল ম্যাচ দেখার সময় তাঁরা বিয়ের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। দুজনের কথা হয় কেকেআর-সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদ ম্যাচের ফাঁকে। ওই দিন ক্লাব হাউসের ১১ নম্বর বক্সে বসে খেলা দেখেন দিলীপ, তাঁর হবু স্ত্রী এবং হবু শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। সেই সময় রিংকুর প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেও তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। জানা গিয়েছে, রিঙ্কুর ছেলে বর্তমানে একটি সেক্টর ফাইভের একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত। মায়ের বিয়েতে মত রয়েছে তাঁর।

এদিকে দিলীপের এই বিয়ের খবরে দলের অনেকে খুশি। অনেকে শুভেচ্ছাবার্তা এবং অভিনন্দন জানিয়েছেন। যদিও এই খবরে খুশি নন সঙ্ঘ পরিবারের অধিকাংশ কার্যকর্তারা। খবরটি শোনার পর দিলীপের কাছে তাঁরা ফোন করে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানালে দিলীপ বাবু সাফ জানিয়ে দেন, তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। এখন আর ফেরা সম্ভব নয়। বিষয়টি নিয়ে ‘সংবাদ কলকাতা’র পক্ষ থেকে দিলীপ বাবুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি রীতিমতো রেগে যান। তিনি আমাদের সাংবাদিককে পাল্টা প্রশ্নে করেন, ‘কেন আমার কি বিয়ে করার অধিকার নেই? বিয়ে করা কি অপরাধ নাকি?’

প্রসঙ্গত দিলীপ বাবুর মা তাঁর সঙ্গেই নিউটাউনের বাড়িতে থাকেন। আগামীতেও তিনি এখানেই থাকবেন। রাজনীতির কাজে দিলীপ ব্যস্ত থাকায় তাঁর মা বাড়িতে একা হয়ে যান। সামনেই ২০২৬-এর বিধানসভা ভোট। দলের প্রচারের কাছে ব্যস্ত হয়ে যাবেন দিলীপবাবু। সেজন্য তাঁর মা চাইছিলেন দিলীপ সংসারী হোক। তাহলে নতুন বৌমার সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন।

তাছাড়া তিনি উপলব্ধি করেন তাঁর অবর্তমানে দিলীপের দেখাশোনা করার কোনও লোক থাকবে না। সেজন্য দিলীপের বিবাহের প্রয়োজন রয়েছে। দিলীপ বাবুও পরে আত্মোপলব্ধি করেন, তাঁর মায়ের যথেষ্ট বয়স হয়েছে। তাঁকে দেখাশোনা করা এবং সঙ্গ দেওয়ার জন্য একজন আপনজনের প্রয়োজন রয়েছে। সেজন্য তিনি সাত পাকে বাঁধা পড়তে রাজি হয়ে যান।

Related posts

Leave a Comment