বিজেপির রাজ্য সভাপতি ও বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা বাবুলাল মণ্ডি রবিবার দাবি করেছেন যে সমাজকর্মী ও রাজনৈতিক কর্মী সূর্য হান্সদার মৃত্যু একটি পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ফল। তিনি অভিযোগ করেন— শাসকদল, স্থানীয় মাফিয়া ও পুলিশ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। রাজ্য দপ্তরে আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে তিনি এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি জানান এবং বলেন, পুলিশি তদন্তে গুরুতর ত্রুটি ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।বাবুলাল মণ্ডি জানান, বিজেপির একটি তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে রিপোর্ট তৈরি করেছে, যার নেতৃত্বে ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা।
রিপোর্টে স্বাক্ষর করেছেন বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতারা— প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা অমর কুমার বাউরি, রাজ্য সহ-সভাপতি ভানু প্রতাপ শাহি, প্রাক্তন মন্ত্রী রণধীর সিংহ, মুখপাত্র অমিত মণ্ডল, প্রাক্তন সাংসদ সুনীল সোরেন এবং বিজেপি মহিলা মোর্চার অনিতা সোরেন। রিপোর্টে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, হান্সদার মৃত্যু ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও পরিকল্পিত।মণ্ডি অভিযোগ করেন, গত ১১ জুন গোড্ডায় এক ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-এর সমাবেশে দলের এক শীর্ষ নেতা ও মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের ঘনিষ্ঠ প্রতিনিধি প্রকাশ্যে হুমকি দেন— সরকারের বিরুদ্ধে গেলে পুলিশ গুলি করবে। পরের দিনই হান্সদার বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং দু’মাস পরে পুলিশি এনকাউন্টারে তাঁর মৃত্যু হয় বলে দাবি করা হয়।তিনি জানান, পুলিশ হান্সদাকে অপরাধী হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করলেও ২৪টি মামলার মধ্যে ১৪টিতে তিনি খালাস পেয়েছিলেন, ৫টিতে জামিনে ছিলেন এবং বাকি ৫টির জামিন আবেদন প্রক্রিয়াধীন ছিল।
এমনকি ২৭ মে তাঁর ছেলের জন্মদিন পালন করছিলেন তিনি, অথচ সেদিনই পুলিশের দাবি— তিনি নাকি একটি সংস্থার গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছিলেন।মণ্ডি আরও প্রশ্ন তোলেন, হান্সদার শরীরে কেবল সামনের দিকে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে, অথচ পুলিশ দাবি করছে তিনি নাকি পালাচ্ছিলেন। গ্রেপ্তারের সময় কোনো সাক্ষী বা মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।হান্সদাকে তিনি বর্ণনা করেন একজন সংবেদনশীল সমাজকর্মী হিসেবে, যিনি অবৈধ খনন, ভূমি দখল, ধর্মান্তর ও বেআইনি কাজের বিরোধিতা করতেন এবং ৪০০-রও বেশি অনাথ শিশুর শিক্ষার জন্য কাজ করতেন। তদন্ত কমিটির সদস্য ভানু প্রতাপ শাহি অভিযোগ করেন, হান্সদাকে হেফাজতে নির্যাতন করার পর গুলি করা হয় এবং ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সন্দেহজনক।
তিনি আদালতের তত্ত্বাবধানে নতুন করে ময়নাতদন্তের দাবি জানান।বাবুলাল মণ্ডি বলেন, হান্সদার পরিবার ও সাধারণ মানুষ সিবিআই তদন্ত আশা করছেন এবং অবিলম্বে রাজ্য সরকারকে তার সুপারিশ করার আহ্বান জানান।