November 1, 2025
দেশ

দীপোৎসবে রঙিন অযোধ্যা: শহরের প্রতিটি কোণায় রামায়ণের ছোঁয়া

দিল্লি: দীপোৎসব ২০২৫ উপলক্ষে রামনগরী অযোধ্যা এখন রূপ নিয়েছে এক অনন্য শিল্পক্যানভাসে। ভগবান শ্রী রামের জন্মভূমি এই শহরজুড়ে চলছে জোর প্রস্তুতি। ধর্মীয় আবহের সঙ্গে মিশেছে সংস্কৃতি ও নান্দনিকতার অপরূপ প্রকাশ।আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে তিন দিনের এই মহোৎসব। এ বছর গোটা জেলায় ৩০ লক্ষেরও বেশি প্রদীপ প্রজ্বলিত হবে, যার মধ্যে ২৮ লক্ষ প্রদীপই জ্বলবে মন্দির ও সরযূ নদীর ঘাটে।অযোধ্যা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ শহরের উড়ালপুল, প্রাচীর ও রাস্তার দেওয়ালে রামায়ণের নানা অধ্যায়কে ফুটিয়ে তুলছে রঙে ও তুলিতে। রামের জন্ম, বনবাস, রাবণের বধ, রাম-সীতার মিলন—সব দৃশ্যই জীবন্ত হয়ে উঠেছে শিল্পীদের তুলিতে। স্থানীয় ও জাতীয় শিল্পীরা মিলে এই শিল্পকর্ম সম্পন্ন করছেন।সাদাতগঞ্জ, নাকা, দেবকালী ও সাকেত পেট্রল পাম্প সংলগ্ন বাইপাসে উড়ালপুলের দেওয়ালে আঁকা হচ্ছে আকর্ষণীয় থ্রিডি চিত্র।


দর্শনার্থীরা যেন যাত্রাপথেই রামায়ণের নানা পর্ব অনুভব করতে পারেন, সেই লক্ষ্যেই চলছে কাজ।স্থানীয় শিল্পীদেরও সুযোগ দেওয়া হয়েছে এই প্রকল্পে। শহরের মূল সড়ক, মন্দির ও জনস্থানগুলির দেওয়ালে ফুটে উঠেছে হনুমানের লঙ্কাদহন, রাম-লক্ষ্মণের সংলাপ ও সীতাহরণের মতো দৃশ্য। আধুনিক ও ঐতিহ্যবাহী শিল্পরীতির মিশেলে গড়ে উঠেছে রামনগরীর সাংস্কৃতিক মহিমার প্রতিচ্ছবি।অযোধ্যা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উপ-সভাপতি অশ্বিনী পাণ্ডে জানিয়েছেন, “রামনগরীর উড়ালপুল ও সড়কে খোদাই করা এই চিত্রগুলো দীপোৎসবকে আরও অনন্য করে তুলেছে।


রামমন্দির সংলগ্ন এলাকায় প্রদীপের আলো আর শিল্পের ছোঁয়ায় তৈরি হয়েছে স্বপ্নময় পরিবেশ। পর্যটকরা মুগ্ধ হয়ে ছবি তুলছেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তা শেয়ার করছেন, যা অযোধ্যার আন্তর্জাতিক পরিচিতিকে আরও জোরদার করছে।”অযোধ্যা তীর্থ বিকাশ পরিষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী জয়েন্দ্র কুমার জানিয়েছেন, দীপোৎসব উপলক্ষে ২৮ লক্ষ প্রদীপ সরবরাহের জন্য টেন্ডার জারি করা হয়েছে। এই প্রদীপগুলো রাম কি পৈড়ির ৫৬টি ঘাটে প্রজ্বলিত হবে।

উত্তরপ্রদেশ সরকারও দীপোৎসবকে বিশ্বমানের আয়োজনে পরিণত করতে কোনও খামতি রাখেনি। শহরের প্রতিটি রাস্তা, মোড় ও ঘাটে ছড়ানো আলো ও রঙের উৎসব চলছে। সরযূ নদীর তীরে লক্ষাধিক প্রদীপ জ্বলে উঠলে আলোকিত হবে গোটা অযোধ্যা। সঙ্গে থাকছে লেজার শো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও রামলীলা। সরকারের লক্ষ্য—দীপোৎসবকে শুধু ধর্মীয় উৎসব হিসেবে নয়, বরং ভারতের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বিশ্বদর্শন হিসেবে উপস্থাপন করা।

Related posts

Leave a Comment