November 1, 2025
দেশ

অসামে শান্ত দীপাবলি, জুবিন গার্গের স্মৃতিতে উদযাপন

গুৱাহাটী, ২০ অক্টোবর: গুৱাহাটীর সন্ধ্যার আকাশে দীপাবলির প্রথম আলো ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে, এবং শহরটিতে একটি শান্ত ও নরম পরিবেশ বিরাজ করছে। বাতাসে কচি কলার পাতা ও ধূপের মৃদু গন্ধ ভাসছে, এবং আতশবাজির শব্দ এবার তুলনামূলকভাবে নরম। অসামের রাজধানী শহর দীপাবলির প্রস্তুতি নিচ্ছে, কিন্তু হৃদয়ে রয়েছে ভক্তি ও শোক দুটোই।গণেশগুড়ি এবং প্যানবাজারের বাজারগুলোতে কলার গাছ, বাঁশের ছড়া এবং মাটির প্রদীপ সাজানো হয়েছে।

দোকানিরা নরম কণ্ঠে ক্রেতাদের আহ্বান জানাচ্ছেন। তাদের টেবিলগুলোতে ছোট ছোট মাটির প্রদীপের সারি আলোকিত।প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে, কলার গাছ অসামের দীপাবলির আচার-অনুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু। পরিবারগুলো তাদের পাতা সাজিয়ে প্রদীপ রাখে, যা পবিত্রতা এবং শুভ Fortune-এর প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।এই বছরও এই রীতি অব্যাহত আছে, যদিও ভিড় অনেকটাই কম। সাধারণত আগে থেকেই বিক্রি হয়ে যাওয়া কলার গাছগুলো এখন সুন্দরভাবে সাজানো আছে, প্রতি গাছের মূল্য ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।

প্রদীপ ও সাজসজ্জা রেখেছে রাস্তাগুলোকে আলোকিত, তবে উৎসবের মেজাজ এবার বেশি শান্ত ও সংযত।এবারের সংযমের কারণ শুধুমাত্র অর্থনীতি বা ব্যস্ততার মধ্যে নেই। এটি আসলে জুবিন গার্গের অকাল প্রয়াণের ফলে জন্ম নেওয়া সমষ্টিগত শোক। গত মাসে সিঙ্গাপুরে প্রয়াত হওয়া অসামের প্রিয় গায়ক জুবিন গার্গকে স্মরণ করে এই বছর বিভিন্ন কালী পূজা এবং দীপাবলি আয়োজকরা উৎসব উৎসর্গ করেছেন। তাঁর গান, যা অসামের প্রতিটি বাড়ি ও রাস্তায় বাজতো, এবার স্মৃতির প্রতীক হয়ে বাজবে।

জুবিন গার্গ সেপ্টেম্বর ২০-এ সিঙ্গাপুরে নর্থইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যালে পরিবেশনা করার কথা ছিল, কিন্তু একদিন আগে তিনি দুর্ঘটনাজনিতভাবে ডুবে যান। তাঁর শেষকৃত্য দিল্লি হয়ে গুৱাহাটীতে আনা হয়, যেখানে হাজার হাজার মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানাতে একত্রিত হয়েছিলেন।আজ রাজ্য জুড়ে প্রদীপের আলো জ্বলে উঠছে কেবল পূজা নয়, বরং স্মৃতিতে। প্রতিটি প্রদীপ, প্রতিটি নীরব প্রার্থনা জুবিন গার্গের প্রতি কৃতজ্ঞতার প্রতীক, যাঁর সুর অসামের হৃদয়ের সঙ্গে মিলিত হয়েছিল।

Related posts

Leave a Comment