আগামীকাল থেকে কার্যকর হতে চলেছে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) সংস্কার। তার ঠিক আগে রবিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি দেশবাসীকে আহ্বান জানান, স্বনির্ভর ভারতের স্বপ্ন পূরণের জন্য স্থানীয়ভাবে তৈরি ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ পণ্যকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের প্রতি গর্ব ফিরে পেতে হবে। আমাদের মান হতে হবে বিশ্বমানের। এমএসএমই খাত জিএসটি হ্রাস থেকে বিশেষভাবে উপকৃত হবে।”
ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের (MSMEs) উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “আমরা ভারতেই তৈরি পণ্য কিনব। দেশের প্রয়োজনীয় জিনিস যা এখানে তৈরি সম্ভব, তা ভারতে তৈরি হতে হবে।”
মোদির বক্তব্যে প্রতিফলিত হয় “ভোকাল ফর লোকাল”-এর স্লোগান। উৎসবের মরশুমে দেশীয় পণ্য কেনার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “উপহার হোক ভারতীয়, পোশাক হোক ভারতের বয়ন, সাজসজ্জা হোক ভারতীয় উপাদানে তৈরি।”
আগামীকাল থেকে কার্যকর হতে চলা নতুন জিএসটি সংস্কারকে প্রধানমন্ত্রী ‘নেক্সট জেনারেশন রিফর্ম’ বলে অভিহিত করেন। তিনি জানান, এটি ভারতের অর্থনীতিকে নতুন গতি দেবে এবং মধ্যবিত্ত, যুবসমাজ ও সাধারণ ভোক্তাদের জন্য স্বস্তি আনবে।
নতুন জিএসটি কাঠামোয় কেবল দুটি স্ল্যাব থাকবে— ৫% এবং ১৮%। এর ফলে সারা দেশে কর কাঠামোয় একরূপতা আসবে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সস্তা হবে। এখন ৯৯% পণ্য ৫% করস্ল্যাবের আওতায় চলে আসায় পরিবারের জীবনযাত্রার খরচ কমবে এবং সঞ্চয় বাড়বে।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, এই সংস্কার থেকে সবাই উপকৃত হবেন— যুবসমাজ, নারী, ব্যবসায়ী এবং পরিবার— সঞ্চয় বাড়লে সুখও বাড়বে। এটি শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নয়, ব্যবসা সহজীকরণ এবং বিনিয়োগকে আকর্ষণীয় করে তুলবে।
তিনি আরও বলেন, স্বনির্ভর দেশ ছাড়া উন্নত ভারতের স্বপ্ন পূরণ সম্ভব নয়। তাই দেশীয় পণ্য কেনার মাধ্যমে আত্মনির্ভর ভারতের যাত্রায় সকলে অংশ নিতে হবে।
নবরাত্রি উপলক্ষে মোদি দেশবাসীকে স্বদেশী চেতনায় উৎসব পালনের আহ্বান জানান। তাঁর কথায়, “এক দেশ এক কর”-এর স্বপ্ন পূর্ণ হয়েছে। এখন সময় এসেছে গর্বের সঙ্গে দেশীয় পণ্য ব্যবহারের এবং আত্মনির্ভর ভারতের শক্তি গড়ে তোলার।
প্রধানমন্ত্রী মোদির আশা, স্বদেশী ও আত্মনির্ভর ভারতের চেতনাকে সামনে রেখে ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারতের লক্ষ্য পূরণ সম্ভব হবে।
