গত বছর আগস্ট মাসে সরকারবিরোধী বিশাল বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের ততকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে অবনতি দেখা দেয়। হাসিনা ভারতে চলে আসার পর থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বেড়েছে বলে অভিযোগ। ট্রাম্প জানিয়েছেন, বাংলাদেশের বিষয়টি তিনি মোদীর উপরেই ছাড়ছেন। ওই দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিতে আমেরিকার কোনও গুপ্ত ভূমিকা নেই বলেও দাবি করেছেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছেন। বহু বছর ধরে এই চেষ্টা চলছে। আমি এই সংক্রান্ত খবরাখবর পড়েছি। তবে বাংলাদেশের ব্যাপারটা আমি মোদীর উপরেই ছাড়তে চাই।’’
গত বছর থেকে অশান্ত বাংলাদেশ। ইউনূস সরকারের আমলে সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। মোদী – ট্রাম্প বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ উঠে আসে। রাজনৈতিক অস্থিরতায় জর্জরিত বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্ন করা হয় ট্রাম্পকে। বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের পরও যে অস্থিরতা চলছে তা দেখেছে গোটা বিশ্বের মানুষ। ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, ‘বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনি কী বলবেন। কারণ আমরা দেখেছি বাইডেন প্রশাসনের সময় আমেরিকা কীভাবে কাজ করেছিল। এরপর মহম্মদ ইউনূস জর্জ সোরোসের পুত্রের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সম্পর্কে কী বলতে চান ?’
বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানোর পাশাপাশি দিল্লি কীভাবে এই পরিস্থিতিকে দেখছে সেই বিষয়টিও মার্কিন প্রেসিডেন্টকে জানিয়েছেন মোদী। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকের পর ভারতীয় সময় হিসেবে শুক্রবার ভোরে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, বাংলাদেশের যে অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি, তাতে আমেরিকার কোনও ভূমিকা নেই।
এদিকে বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিয়ে নাশকতামূলক কাজ চালাচ্ছে ভারতে। পিছন থেকে মদত যোগাচ্ছে পাকিস্তান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর আমেরিকে সফরে গিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এই বিষয়টি তুলে ধরেন। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সরকারের অচলাবস্থা এবং মৌলবাদী শক্তিকে মদত দেওয়ার ফলে এই ঘটনা বেড়েই চলেছে। এরই সঙ্গে বিগত দিনে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নিয়ে ভারতের উদ্বেগ প্রকাশের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে প্রথম আলোর রিপোর্টে। এরপরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিষয়টির মোকাবিলা করার জন্য যাবতীয় সিদ্ধান্ত মোদির ওপরেই ছেড়ে দিয়েছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের বিষয়টি আমি প্রধানমন্ত্রী মোদীর ওপর ছেড়ে দেব।’ এরই সঙ্গে তিনি দাবি করেছিলেন, ঢাকায় পালা বদলে মার্কিন ডিপ স্টেটের কোনও ভূমিকা নেই। ট্রাম্পের এই মন্তব্য নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশি সংবাদপত্রগুলিতে? এদিন মোদীর সঙ্গে আলোচনায় ট্রাম্প জানিয়ে দেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে আমেরিকার কোনও ভূমিকা নেই।
ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, ‘বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনি কী বলবেন। কারণ আমরা দেখেছি বাইডেন প্রশাসনের সময় আমেরিকা কীভাবে কাজ করেছিল। এরপর মহম্মদ ইউনূস জর্জ সোরোসের পুত্রের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সম্পর্কে কী বলতে চান ?’ এই প্রশ্নের জবাবেই ট্রাম্প বলেন, ‘সেখানে আমাদের দেশের কোনও ভূমিকা নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি এমন একটি বিষয় যা নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন। বহু বছর ধরে এই চেষ্টা চলছে।তাই বাংলাদেশের বিষয়টি আমি মোদীর উপরেই ছাড়তে চাই।’
ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে মোদী এবং ট্রাম্পের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা ও সে সম্পর্কে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি ও ভারতের অবস্থান ট্রাম্পকে জানিয়েছেন মোদী। নিজের উদ্বেগও ব্যক্ত করেছেন।’
বিদেশসচিব আরও বলেন, ‘ আমরা আশা করছি, বাংলাদেশে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। আমরা ওদের সঙ্গে গঠনমূলক এবং স্থিতিশীল আলোচনা করতে পারব। তবে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী ট্রাম্পের সঙ্গে সেই বিষয়ে কথা বলেছেন।’
previous post