বাংলা চলচ্চিত্র জগতের প্রিয় মুখ, অভিনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায় আর নেই। সোমবার সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। ১৫ অগস্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে, ১৭ অগস্ট থেকে ভেন্টিলেশনে ছিলেন। মৃত্যুকালে পাশে ছিলেন তাঁর মা ও দ্বিতীয় স্ত্রী অঙ্কিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়ম মেনে প্রায় চার ঘণ্টা পরই তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে পরিবার জানিয়েছে।
রাজনীতি থেকে সরে আসা
অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন জয়। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে তিনি শতাব্দী রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, যদিও সাফল্য পাননি। পরবর্তী সময়ে বিজেপির হয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিলেও ২০২১ সালে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন—তিনি আর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকবেন না।
স্মরণীয় অভিনেতা
চুমকি চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর জুটি এখনও টলিউডপ্রেমীদের মনে গেঁথে আছে। সুখেন দাস ও অঞ্জন চৌধুরীর একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। হীরক জয়ন্তী, মিলন তিথি, জীবন মরণ, নাগমতি থেকে শুরু করে চপার—সব ক’টি ছবিতেই তাঁর অভিনয় বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছিল। আশির ও নব্বইয়ের দশকে তিনি ছিলেন বাংলা সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় নায়ক।
টলিপাড়ার শোক
অভিনেতার প্রয়াণে শোকস্তব্ধ টলিপাড়া। সহকর্মীরা জানিয়েছেন, বাংলা সিনেমায় এক উজ্জ্বল অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল তাঁর মৃত্যুতে। দর্শকের কাছে রোমান্টিক নায়ক হিসেবে যে জায়গা তিনি তৈরি করেছিলেন, তা অমলিন থাকবে চিরকাল।
জয় বন্দ্যোপাধ্যায়—এক নাম, যিনি একসঙ্গে জড়িয়ে আছেন সিনেমা আর রাজনীতির দুই মঞ্চের সঙ্গে। আশির দশকে রোমান্টিক নায়ক হিসেবে উত্থান, হীরক জয়ন্তী, মিলন তিথি থেকে চপার—সবেতেই দর্শকের কাছে ভরসার মুখ। সুখেন দাস ও অঞ্জন চৌধুরীর ছবিতে তাঁর অভিনয় আজও আলোচনায়।
২০১৪ সালে রাজনীতিতে পা রেখে শতাব্দী রায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করলেও সাফল্য মেলেনি। পরে সক্রিয়ভাবে বিজেপির সঙ্গে থেকেও ২০২১ সালে রাজনীতি থেকে সরে আসেন।
সোমবার সকালের মৃত্যু তাই শুধু এক অভিনেতার প্রয়াণ নয়, এক বহুমুখী জীবনের সমাপ্তি। যিনি সিনেমা দিয়েছেন, রাজনীতি দেখেছেন, আর শেষ পর্যন্ত থেকেছেন দর্শকের ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু।