দুর্গাপুর: জুনা আখড়ার রাষ্ট্রীয় সচিব এবং দুর্গাপুর ত্রিনাথ আশ্রমের প্রধান শ্রীমহন্ত স্বামী রঞ্জিতানন্দ গিরিজি মহারাজের আবির্ভাব দিবস উপলক্ষে দেশের নানা প্রান্ত থেকে সাধুসন্ত সমাগম এবং ভক্ত সমাগম হবে বলে জানা গিয়েছে। শ্রীমৎ রঞ্জিতানন্দ গিরিজি মহারাজের শুভ আবির্ভাব উপলক্ষে দুর্গাপুরে অনুষ্ঠিত হবে ধর্মীয় সেমিনার, উচ্চাঙ্গ সংগীতের অনুষ্ঠান এবং নানা উৎসব। আগামী ২৪ অক্টোবর শুক্রবার এই মহোৎসবের সূচনা হবে দুর্গাপুরের এমএএমসি হেভি বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন ত্রিনাথ আশ্রমে। ‘জুনা আখড়া’র আধ্যাত্মিক মার্গপ্রচার ও গুরুশিষ্য পরম্পরা রক্ষার উদ্দেশ্যেই এ আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আশ্রমের প্রচারে নিযুক্ত নারায়ণ মজুমদার। 
প্রাক্তন শ্রীমন্ত সদানন্দ গিরিজি মহারাজের নির্দেশে এই আখড়া বিভিন্ন শাখা দেশজুড়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নৈহাটি, জনাই, আসাম এবং ত্রিপুরা বিভিন্ন জায়গায় আজ থেকে বহু বছর আগে সদানন্দ গিরিজি মহারাজ এই আশ্রমগুলোর প্রতিষ্ঠা করেন। শ্রী মজুমদার জানিয়েছেন, সদানন্দগিরিজি মহারাজের সাধনা এবং ভক্তি মার্গের যোগ্য উত্তরসূরী স্বামী রঞ্জিতানন্দগিরি মহারাজ। তিনি বলেছেন, ৭০০ জন বিশিষ্ট ভিআইপি তাঁদের সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন এই অনুষ্ঠানে আসার জন্য। “দুর্গাপুর শাখার আয়োজনে আসন্ন উৎসবে রঞ্জিতানন্দ গিরিজি মহারাজের পাশাপাশি অন্যান্য মঠ ও আশ্রমের সাধু-সন্তরা উপস্থিত থাকবেন। এই আশ্রমে আধ্যাত্মিক আলোচনায় উপস্থিত থাকবেন জুনা আখড়ার মহামন্ডলেশ্বর স্বামী শুদ্ধগুনাত্মনন্দজি মহারাজ। ধর্মীয় সম্মেলনে অংশ নিতে আসবেন হরিদ্বারের শ্রী পঞ্চায়েতি আখড়া মহানির্বাণির মহামন্ডলেশ্বর এবং ব্রহ্মময়ী কালীবাড়ির প্রধান মহন্ত স্বামী পরমাত্মানন্দ ভৈরব মহারাজ,” জানিয়েছেন শ্রী নারায়ণ মজুমদার। আশ্রম সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, অনুষ্ঠানে ভক্তদের জন্য থাকবে গীতা পাঠ, নামসংকীর্তন, আরতি, ধর্মীয় আলোচনা ও গুরুপূজার বিশেষ ব্যবস্থা।
দুপুরে অনুষ্ঠিত হবে সন্ন্যাসী ও দেশ বিদেশ থেকে আগত ভক্ত সম্মেলন। ‘সত্যধর্ম ও সমাজসেবা’ বিষয়ে শ্রীমহন্ত গিরিজি মহারাজ বক্তব্য রাখবেন বলে আয়োজক সূত্রে জানা গিয়েছে। সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ভক্তিমূলক সংগীত পরিবেশনা। রঞ্জিতানন্দ গিরিজি মহারাজের আধ্যাত্মিক কার্যকলাপ নিয়ে দুর্গাপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ইতিমধ্যেই উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। স্থানীয় আখড়ার সদস্যরা জানিয়েছেন, “গুরুজির আগমনে দুর্গাপুর আজ আধ্যাত্মিক আবহে ভরপুর। তাঁর শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ সত্য ও সেবার পথ চিনতে পারবে।”
গিরিজি মহারাজ বর্তমানে ‘জুনা আখড়া’র রাষ্ট্রীয় সচিবের দায়িত্বে আছেন। তাঁর মূল লক্ষ্য— গুরুশিষ্য পরম্পরা বজায় রেখে সমাজে ধর্মীয় সহিষ্ণুতা, মানবিকতা ও সেবার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া। আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “এ ধরনের উৎসবের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম আধ্যাত্মিক মূল্যবোধের সঙ্গে পরিচিত হয়। গুরুজির আশীর্বাদই আমাদের প্রেরণা।”

