জঙ্গলে শুরু, এখন মন্দিরে
বীরভূম জেলার বৃহত্তম গ্রামগুলির মধ্যে অন্যতম রাজনগর ব্লকের তাঁতিপাড়া। এই তাঁতিপাড়া গ্রামে প্রায় পনের হাজার মানুষের বসবাস। এই গ্রামে বারো মাসে তেরো পার্বণ হলেও তাঁতিপাড়া হাটতলার এক রাত্রির রক্ষা কালী পূজো আজও মানুষের সঙ্গে মানুষের মেলবন্ধন ঘটিয়ে চলেছে।
তাঁতিপাড়ার এই রক্ষা কালীপূজো আনুমানিক ৩০০ বছরের প্রাচীন। চৈত্র মাসের শেষ দিক করে এই রক্ষা কালীপুজো হয়। পুজো কমিটি সূত্রে প্রকাশ.. একসময় তাঁতিপাড়া সহ আশেপাশের গ্রামে মহামারী রোগ চরম আকার ধারণ করেছিল। সেই সময়ই এক সন্ন্যাসী এই মহামারীর হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য রক্ষা কালী পূজার বিধান দিয়েছিলেন। তারপর থেকেই রক্ষা কালী পূজার সূচনা হয়েছিল এবং মহামারী অনেকটাই কমে গিয়েছিল বলে মানুষের বিশ্বাস। কিন্তু তারপর আর সেই সন্ন্যাসীর দেখা পাওয়া যায়নি।
মানুষের বিশ্বাস ধর্মীয় আবেগ এবং ভক্তিকে সঙ্গে নিয়ে তাঁতি পাড়া সহ আশেপাশের গ্রামের মানুষ আজও আড়ম্বর সহকারে এই রক্ষা কালী পূজোয় অংশগ্রহণ করে। দূর দূরান্তের বহু মানুষ এবং আত্মীয়-স্বজনের ভরপুর হয়ে থাকে তাঁতি পাড়ার বেশিরভাগ বাড়িতে। সূর্য অস্ত যাওয়ার পর এই রক্ষা কালী প্রতিমার তৈরির কাজ শুরু হয় এবং সূর্য উদয় হওয়ার আগেই এই রক্ষাকালীকে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয়ে বাদ্যযন্ত্র সহকারে বিদায় জানান বিসর্জন দেন এবং প্রার্থনা জানান মনস্কামনা পূর্ণ করে আবার এসো মা। এই রক্ষা কালী পূজা উপলক্ষে সারারাত জমজমাট থাকে এবং মিলন মেলার রূপ নেই তাঁতিপাড়া হাটতলা সহ তাঁতিপাড়া গ্রাম। স্বভাবতই এই এক রাত্রি রক্ষা কালী পূজার জন্য সারা বছরই এখানকার মানুষ অপেক্ষায় থাকেন।