সংবাদ কলকাতা, ২৮ অক্টোবর: রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনকে ঘিরে বিশেষ নিবিড় পুনর্বীক্ষণ বা SIR (Special Intensive Revision) প্রক্রিয়া শুরু হতেই নতুন রাজনৈতিক তরঙ্গ তৈরি হয়েছে। বিরোধী দলগুলি যেখানে এসআইআর-কে স্বাগত জানিয়েছে, সেখানে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস জানিয়েছে—দলটি এই প্রক্রিয়ার বিরোধী নয়; তবে তাদের মূল উদ্বেগ, যাতে রাজনৈতিক অভিসন্ধিতে কোনও প্রকৃত ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ না পড়ে।
তৃণমূলের বক্তব্য, বাংলায় দীর্ঘদিন ধরে প্রান্তিক সম্প্রদায়, কৃষক, মজুর, দরিদ্র ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে ভোট তালিকায় অনিয়মের শিকার হতে হয়েছে। এবারও যেন ওই প্রবণতা নতুন আকারে ফিরে না আসে, সেই আশঙ্কাই তুলে ধরেছে তারা। শাসক দলের মত, দলীয় পরিচয় বা ধর্ম-জাতপাত নির্বিশেষে যে কোনও প্রকৃত ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়া মানে তার সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেওয়া।
রাজ্যের এক তৃণমূল নেতা বলেন, “ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখা জরুরি। কিন্তু তা যেন কারও ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় পরিণত না হয়। আমরা এসআইআর-এর বিরোধী নই—আমরা বিরোধিতা করছি ‘চিন্তিত বাদ’-এর রাজনীতি।”
তৃণমূলের তরফে কমিশনের প্রতি অনুরোধ—পর্যালোচনা হোক, ভুল সংশোধন হোক, কিন্তু প্রকৃত নাগরিকদের নাম যেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাদ না দেওয়া হয়। দলটি পাশাপাশি অভিযোগ জানিয়ে বলেছে, যে কোনও রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ভোটার তালিকাকে “বাছাই করা ছাঁটাইয়ের অস্ত্র” বানানোর চেষ্টা করলে তা হবে গণতন্ত্রের পরিপন্থী।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অবস্থান স্পষ্টতই তৃণমূলের ভোট-ব্যাংক রক্ষার কৌশল। একই সঙ্গে বিজেপি-র “ভুয়ো নাম বাদ দেওয়ার” প্রচারের পাল্টা চাপও তৈরি করতে চাইছে শাসক শিবির। নির্বাচন কমিশন অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে, প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ ও পক্ষপাতহীনভাবে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
আগামী কয়েক সপ্তাহ ধরেই মাঠপর্যায়ে এই এসআইআর প্রক্রিয়া চলবে। তার মধ্যেই রাজনীতির ময়দান আরও উত্তপ্ত হবে বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

