নাসিক: ভারতের প্রতিরক্ষা ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় রচিত হলো শুক্রবার। হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেডের (HAL) তৈরি হালকা যুদ্ধবিমান তেজস Mk1A সফলভাবে তার প্রথম উড়ান সম্পন্ন করেছে, যা দেশের স্বনির্ভর প্রতিরক্ষা সক্ষমতার এক গর্বের মুহূর্ত হিসেবে ধরা হচ্ছে। এই ঐতিহাসিক উড্ডয়নের পর বিমানটিকে ওয়াটার ক্যানন স্যালুট দিয়ে সম্মান জানানো হয়।প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং উপস্থিত থেকে এই ঐতিহাসিক উড়ান প্রত্যক্ষ করেন এবং বলেন, “তেজস আজ ভারতের আত্মনির্ভরতার প্রতীক।
 আগে আমরা বিদেশের উপর নির্ভর করতাম, কিন্তু আজ ৬৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নিজস্বভাবে তৈরি করছি। শীঘ্রই এই সংখ্যা শতভাগে পৌঁছাবে।”রাজনাথ সিং একইসঙ্গে উদ্বোধন করেন তৃতীয় LCA তেজস Mk1A উৎপাদন লাইন এবং দ্বিতীয় HTT-40 প্রশিক্ষণ বিমান উৎপাদন লাইন, যা HAL-এর নাসিক কারখানায় স্থাপিত হয়েছে।তিনি বলেন, “আগে ভারতের ৬৫-৭০ শতাংশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিদেশ থেকে আমদানি করা হতো। কিন্তু এখন ভারত নিজেই যুদ্ধবিমান থেকে শুরু করে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে। 
আগামী দিনে আমরা ১০০ শতাংশ স্বনির্ভর হব।”রাজনাথ সিং উল্লেখ করেন যে আধুনিক যুদ্ধের ধরন বদলে যাচ্ছে—“আজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), সাইবার যুদ্ধ, ড্রোন ও নেক্সট জেনারেশন বিমানের যুগ। যুদ্ধ শুধু আকাশ বা স্থলভাগে সীমাবদ্ধ নয়, বরং বহু ফ্রন্টে লড়া হচ্ছে। ভারতকে এই নতুন যুদ্ধে সবসময় এগিয়ে থাকতে হবে।”তিনি আরও জানান, ‘অপারেশন সিন্ধুর’ সময় HAL টিম দিনরাত কাজ করে সশস্ত্র বাহিনীর বিমান যেমন সুখোই, জাগুয়ার, মিরাজ, তেজস-এর রক্ষণাবেক্ষণ করেছে। 
“এটি প্রমাণ করেছে যে আমরা কেবল যুদ্ধ সরঞ্জাম তৈরি করতে পারি না, বরং সেই সরঞ্জাম দিয়েই নিজেদের রক্ষা করতে পারি,” বলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী।HAL-এর প্রশংসা করে রাজনাথ সিং বলেন, “সুখোই-৩০ বিমানে ব্রহ্মোস মিসাইল সংযোজনের কাজ HAL সফলভাবে করেছে। তেজস ও HTT-40 বিমানের উৎপাদনও সরকার, শিল্প ও শিক্ষাবিদদের যৌথ প্রয়াসের ফল।”নতুন উৎপাদন লাইন চালু হওয়ার ফলে এখন প্রতি বছর ২৪টি তেজস Mk1A বিমান তৈরি করা সম্ভব হবে, যা ভারতের নিজস্ব যুদ্ধবিমান নির্মাণ ক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তুলবে।
							previous post
						
						
					
