November 1, 2025
দেশ বিদেশ

তিয়ানজিনে মোদি-শি বৈঠক: মানবকল্যাণে ভারত-চীন সহযোগিতার বার্তা

চীনের তিয়ানজিন শহরে অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনের আগে রবিবার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, কাজানে গত বছর তাঁর বৈঠক থেকে দুই দেশের সম্পর্ক ইতিবাচক পথে এগোতে শুরু করেছে। তিনি উল্লেখ করেন, সীমান্তে সেনা প্রত্যাহারের পর শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ প্রতিনিধিদের মধ্যে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নিয়ে চুক্তি হয়েছে। পাশাপাশি আবার শুরু হয়েছে কৈলাশ মানসসরোবর যাত্রা এবং ভারত-চীনের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালু হচ্ছে।

মোদি বলেন, “ভারত ও চীনের ২৮০ কোটিরও বেশি মানুষের স্বার্থ এই দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সঙ্গে জড়িত। এটি শুধু দুই দেশের নয়, পুরো মানবজাতির কল্যাণের পথ তৈরি করবে।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা পারস্পরিক আস্থা, সম্মান ও সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, “ভারত ও চীন আমাদের জনগণের কল্যাণ বৃদ্ধির ঐতিহাসিক দায়িত্ব বহন করছে। পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলোর সংহতি ও পুনর্জাগরণ এবং মানবসমাজের অগ্রগতিতেও আমাদের বড় ভূমিকা রয়েছে।”

তিনি আরও মন্তব্য করেন, “দুই দেশের জন্যই সঠিক সিদ্ধান্ত হলো বন্ধুত্ব গড়ে তোলা, সুশৃঙ্খল প্রতিবেশী সম্পর্ক রাখা, একে অপরকে সাফল্য অর্জনে সাহায্য করা এবং ড্রাগন ও হাতির একত্রিত হওয়া।”

মোদি-শির বৈঠকটি প্রায় ১০ মাস পর অনুষ্ঠিত হলো। এর আগে তারা রাশিয়ার কাজানে ব্রিকস সম্মেলনের সময় সাক্ষাৎ করেছিলেন। সেখান থেকেই দুই দেশের সম্পর্কে উন্নতির আভাস পাওয়া গিয়েছিল। তবে ইতিহাসের দিক থেকে ভারত-চীনের সম্পর্ক সবসময় মসৃণ ছিল না। ১৯৬২ সালে সীমান্ত যুদ্ধ, পরবর্তী কয়েক দশকে সংঘর্ষ এবং বিশেষ করে ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষ সম্পর্ককে গভীর সংকটে ফেলেছিল।

এ বছরের এসসিও সম্মেলনকে (২০০১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সবচেয়ে বড় সমাবেশ) ইতিমধ্যেই চীন বলছে—“আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নতুন ধারা গড়ার গুরুত্বপূর্ণ শক্তি।”
প্রায় ২০ জন বিশ্বনেতা, যার মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও আছেন, এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, শি জিনপিং এই সম্মেলনের মাধ্যমে বিশ্বকে দেখাতে চান কেমন হতে পারে একটি “আমেরিকা ও ইউরোপ-বিহীন” বিশ্বব্যবস্থা, যেখানে ভারত, চীন ও রাশিয়া নেতৃত্ব দেবে গ্লোবাল সাউথকে।

Related posts

Leave a Comment