পারুল খামারিয়া, বাঁকুড়া, ৩০ জুন: “গাছ লাগানো মানে ভবিষ্যতের জীবনের বীজ বপন করা”—এই মহান উপলব্ধিকে সামনে রেখে বেলাকুড়ি গ্রামে ‘দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির’-এর উদ্যোগে গতকাল, ২৯ জুন বেলাকুড়ির মা শ্মশান কালী মন্দির প্রাঙ্গণে একটি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়।
এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীতে ‘দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির’-এর পক্ষ থেকে বিশিষ্ট সমাজসেবী অসীম লাল মুখার্জী প্রায় ১০০টি চারাগাছ তুলে দেন নবতরুণ সংঘের সদস্যদের হাতে। দুটি সংগঠনের সদস্যরা মিলে চারাগাছ রোপণ করে। চারাগুলির মধ্যে ছিল আম, জাম, কাঁঠাল, সবেদা, দেবদারু প্রভৃতি ফল ও অর্থকরী গাছ।
এদিনের কর্মসূচীতে নবতরুণ সংঘের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন কৌশিক ঘোষাল, বিপ্লব মুখার্জী, সুমন ঘোষাল, দেব ঘোষাল, স্বপন ঘোষাল, সায়ন ঘোষাল, স্বপন চক্রবর্তী, রাম রজক, বুধন বাউরি সহ বহু সদস্য। সবার হাতেই এক একটি চারাগাছ যেন ভবিষ্যতের ছায়ার প্রতিশ্রুতি হয়ে ফুটে উঠেছিল।
দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির-এর মুখ্য উপদেষ্টা ড. কল্যাণ চক্রবর্তী তার বক্তব্যে বলেন, বৃক্ষের মত আপন কিছু নেই। বৃক্ষ আমাদের ছায়া দেয়, প্রাণ দেয়, শান্তি দেয়। কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত বলেছেন— ‘সবুজ পাতায় লুকায় যত প্রাণের মধুরতা’। আমরা যত গাছ রোপণ করব, ততই প্রাণ রক্ষা পাবে।
দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির-এর অন্যতম সদস্য মিলন খামারিয়া বলেন, আমরা একটি সনাতনী মূল্যবোধ সম্পন্ন সংস্থা। গাছ লাগানো শুধু প্রকৃতির সঙ্গে নয়, আমাদের সংস্কৃতি ও ধর্মের সঙ্গেও গভীরভাবে জড়িত। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন— ‘মাটি আপন করে নেয় যাকে, সে মাটিরই হয়’। তাই দেশের মাটিকে ভালোবাসতে হলে গাছ লাগাতেই হবে।
স্থানীয় সমাজসেবী অসীম লাল মুখার্জী, যিনি বেলাকুড়ি গ্রামেরই সন্তান, তিনি নবতরুণ সংঘের তরুণ সদস্যদের উদ্বুদ্ধ করে বলেন, যে মাটিতে জন্ম, তাকে কিছু ফিরিয়ে দেওয়াই মানবধর্ম। নজরুল ইসলাম বলেছেন— ‘সবুজ পাতার মর্মরে আজো জাগে জীবনের গান’। তাই এ কাজ যেন একটি চলমান যাত্রা হয়।
সব মিলিয়ে এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী ছিল প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা এবং সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধার এক অপূর্ব মিলনমেলা।
