23 C
Kolkata
December 23, 2024
Featured

বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কলমের চারা তৈরি ও ফল বাগিচায় সাথী ফসল চাষের প্রশিক্ষণ হল

মিলন খামারিয়া: ২১শে অক্টোবর,কল্যাণী। আজ বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সর্ব ভারতীয় সমন্বিত ফল গবেষণা কেন্দ্র'(ICAR- AICRP on fruits)-এর পক্ষ থেকে কলমের চারা তৈরি ও ফল বাগিচায় সাথী ফসল চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হল। এই প্রশিক্ষণ শিবিরে পশ্চিমবঙ্গের ৩ টি জেলার(পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান ও হাওড়া) ৪৫ জন কৃষি উদ্যোগী উপস্থিত ছিলেন। উন্নত প্রজাতির ফলের গাছ থেকে কলমের সাহায্যে চারা তৈরি করে, তার মধ্যে কী কী সাথী ফসল চাষ করা যায় – মূলত তারই উপর এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

এই প্রশিক্ষণ শিবিরে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সর্বভারতীয় সমন্বিত ফল গবেষণা কেন্দ্রের এই প্রকল্পের আধিকারিক ড. দিলীপ কুমার মিশ্র ,অধ্যাপক কল্যাণ চক্রবর্তী, অধ্যাপক ফটিক কুমার বাউরি, ড. দেবলীনা মাঝি ও অঙ্কিতা রায়।

শুরুতেই বিভিন্ন প্রকারের ফল গাছ ও তাদের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করেন ড. কল্যাণ চক্রবর্তী।তিনি বিভিন্ন প্রকারের ফলের গুণাগুণ নিয়েও তিনি আলোচনা করেন। কাটাকলম, গুটিকলম, জোড়কলম কীভাবে দেওয়া যায় তা হাতে কলমে শেখান অধ্যাপক চক্রবর্তী।

তারপর ড. বাউরি বলেন বর্তমান সময়ে ফল চাষ অত্যন্ত লাভজনক একটি পেশা। বিশেষ করে দো-ফলা কাঁঠাল চাষ অত্যন্ত লাভজনক পেশা। আমাদের পশ্চিমবঙ্গের মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন হচ্ছেন আর তাতেই ফল খাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। সেইজন্য ফল চাষ করে প্রচুর মুনাফা অর্জন করা যেতে পারে।

ফল চাষের পাশাপাশি ফলের প্রক্রিয়াকরণের উপর জোর দেওয়া হয় । সেক্ষেত্রে ফলের গুণাগুণ বজায় রেখে বিভিন্ন প্রকারের ফলের প্রক্রিয়াকরণ করে তা বিক্রি করলে বেশ লাভ হতে পারে। আম থেকে আচার,আমসত্ত্ব,কাঁঠালের চিপস্, লিচুর পানীয় – বিভিন্ন ফল থেকে বিভিন্ন দ্রব্য তৈরি করা যেতে পারে।

উদ্ভিদ রোগতত্ত্ববিদ অঙ্কিতা রায় বলেন,বর্তমান সময়ে ফল চাষ করতে গেলে ফসলে রোগ লাগার ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। ফল গাছ ও ফলে বিভিন্ন পোকা আক্রমণ করতে পারে। তাদের বিনাশ জৈব পদ্ধতিতে করতে হবে। তাহলে সেই ফল খেয়ে মানুষের শরীর সুস্থ থাকবে।

এরপর কৃষকদের মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়। বাগানের বিভিন্ন ফলের গাছ সম্পর্কে জানান দেওয়া হয়। গৌণ ফল,যেমন – গোলাপজামুন, ফলসা, আঁশফল,আতা, চেরি ইত্যাদি চাষ করেও অনেক লাভ করা যেতে পারে – সে সম্পর্কেও জানান দেওয়া হয়।

এদিন বিশেষ ভাবে উপস্থিত ছিলেন ড. কল্যাণ জানা। তিনি ফল বাগানের মধ্যে সাথী ফসল হিসেবে বিভিন্ন গো-খাদ্য চাষের কথা বলেন। পাশাপাশি ডাল জাতীয় শস্য উৎপাদন করলে জমির উর্বরতা বাড়বে বলেও জানান তিনি।

এই প্রশিক্ষণ শিবির সম্পর্কে এই প্রকল্পের আধিকারিক দিলীপ কুমার মিশ্র বলেন,”চাষিরাই আমাদের দেশের অন্নদাতা। তারা উন্নত মানের ফলের চারা রোপণ করে ভালো ফসল ফলিয়ে আমাদের খাদ্যের সংস্থান করছেন। আজ যে চাষিরা উৎসাহী হয়ে এসেছেন তারা আরও বেশি করে উন্নত জাতের ফলের চারা লাগিয়ে ফসল ফলাতে পারেন। বেকাররা স্বাবলম্বী হোক ফল চাষ করে,আত্মনির্ভরশীল ভারত গড়ে উঠুক;তাহলেই আমাদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়া সার্থক হবে।”

প্রশিক্ষণ শেষে উপস্থিত চাষিদের হাতে একটি কিটস্ ব্যাগ, উন্নত প্রজাতির ফলের চারা(আম, কাঁঠাল, লিচু সবেদা ও জামরুল) ও শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়।

Related posts

Leave a Comment