29 C
Kolkata
August 2, 2025
বাংলাদেশ

বাংলাদেশে হিন্দুদের বিক্ষোভ আরও শক্তিশালী, আজ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ইউনুস

ঢাকা: হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে আসার পরেই আগুন জ্বলতে শুরু করে সারা বাংলাদেশে। প্রশাসনিক ক্ষমতায় কেউ না থাকায় এক লহমায় দেশে অরাজকতা বেড়ে যায় লক্ষগুণ। ছাত্রদের আন্দোলন মাঝপথে হাইজ্যাক করে নেয় দেশে নিষিদ্ধ জামাত গোষ্ঠী। তারা সারাদেশ জুড়ে ৭১ -এর মতো সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালাতে শুরু করে। হিন্দু সহ অন্য সংখ্যালঘুদের উপর একের পর এক হামলার অভিযোগ ওঠে। খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, অগ্নিসংযোগ, মন্দির ও মূর্তি ভাঙা থেকে বাড়িতে অগ্নি সংযোগ, কোনও কিছুই বাদ যায়নি। আর এই অত্যাচারের প্রতিবাদে এবার রাস্তায় নেমেছে সংখ্যালঘুরা। সোমবার রাজধানী ঢাকার শাহবাগে বিক্ষোভ দেখান কয়েকশো মানুষ। হামলা বন্ধ সহ আট দফা দাবিতে সোমবার গোপালগঞ্জেও বিক্ষোভ সমাবেশে সামিল হন কয়েক হাজার মানুষ। রবিবার চট্টগ্রামেও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার দাবিতে বিরাট প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়। আর এই পরিস্থিতিতে আজ, মঙ্গলবার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মহম্মদ ইউনুস।

সোমবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ডঃ খালিদ হোসেন জানিয়েছেন, সমস্যা মেটাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, তা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বৈঠকে আলোচনা হবে। খালিদ জানান, পুলিসকর্মীরা কাজে যোগ দিতে শুরু করেছে। আর কোনও হামলার ঘটনা ঘটবে না। তাঁর দাবি, সংখ্যালঘুদের উপর যারা হামলা চালাচ্ছে তারা দুষ্কৃতী। তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সরকার সব ধর্মের সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে। খালিদ জানান, যাদের বাড়ি, ঘর ও মন্দির ধ্বংস হয়েছে, সেই তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে।

সোমবার বাংলাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, পূজা উদযাপন কমিটি ও কালীবাড়ির যৌথ উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। হিন্দুদের বাড়ি ও মন্দিরে হামলা বন্ধ, হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণসহ আট দফা দাবিতে মিছিল করা হয়। এদিন সকালে গোপালগঞ্জের পাঁচটি উপজেলা থেকে প্রচুর মানুষ গোপালগঞ্জ কেন্দ্রীয় কালীবাড়ি ও প্রেস ক্লাবের সামনে সমবেত হয়। এরপর মিছিল করে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার প্রতিবাদ জানানো হয়। এদিনের মিছিলে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। বিভিন্ন ফেস্টুন, ব্যানারের পাশাপাশি মিছিলে ‘‘স্বাধীন দেশে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। এই মিছিলের জেরে এদিন টুঙ্গিপাড়া-গোপালগঞ্জ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুপুরের পর এই সমাবেশ শেষ হয়।

বিকেলে ঢাকার শাহবাগ মোড়েও সংখ্যালঘুদের উপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে দু’ঘণ্টা বিক্ষোভ দেখায় কয়েকশো মানুষ। তার আগে মানব বন্ধনও হয়। বিক্ষোভের জেরে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রবিবার একই দাবিতে চট্টগ্রামেও মিছিল বের হয়। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নিয়ে মিছিলে অংশ নেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁরা অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর সংখ্যালঘুদের উপর ২০৫টি হামলা হয়েছে। প্রাণ গিয়েছে একশো জনেরও বেশি মানুষের। কেন এমন ব্যবহার করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আন্দোলনকারীরা।

Related posts

Leave a Comment