শঙ্কর মণ্ডল: প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তৃতীয়বার শপথ গ্রহণ করে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন মাননীয় নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদী। সেই সঙ্গে বিরোধীদের সমস্ত চক্রান্ত ব্যর্থ করলেন। এখন কূটনৈতিক আভ্যন্তরীণ রাজনীতির মাধ্যমে সরকারের প্রতি সমর্থনের সংখ্যা বাড়িয়ে নিতে হবে। কারণ নীতিশ ও নাইডুর ওপর বিশ্বাস একেবারেই করা যাবে না। এদের কাছে দেশ, ন্যায় এসবের চাইতে ব্যক্তি স্বার্থ অনেক বেশি মূল্যবান। নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্ন হয়তো সম্পূর্ণ সফল হবে না। বিশেষ করে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, এক নির্বাচন ও ভারতকে বিশ্ব অর্থনীতিতে তিন নম্বর স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য শক্তিশালী সংস্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ কিছুটা কঠিন হবে। আর হিন্দুরাষ্ট্র গঠন কখনও সরকারের পক্ষে করা সম্ভব নয়। এর জন্য দরকার সর্বস্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে ব্যাপক দাবি তোলা। প্রচুর হিন্দু সংগঠন আছে, যার অধিকাংশই দেখনধারী ও টাকা কামানোর জন্য। হিন্দুরাষ্ট্র গঠনের দাবি নিয়ে কোনও আন্দোলন দেখা যায় না।
যাই হোক, আমার প্রশ্নটা অন্য জায়গায়। একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাওয়ার পরেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা বয়কট করলেন। সংসদীয় রাজনীতিতে এটি অত্যন্ত অসৌজন্যমূলক। কিন্তু ভুলে যাবেন না, এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনীতি। আর এই রাজনীতিটাই বোঝার ক্ষমতা ও তার কাউন্টার রাজনীতি করার যোগ্যতা না থাকায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেকটা এগিয়ে থাকে। পশ্চিমবঙ্গের মাটি বামপন্থার মাটি। যে বামপন্থী রাজনীতি করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ সফল। স্লোগান এই রাজ্যের রাজনীতিতে একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বিজেপির সর্বস্তরের লোকজনই নতুন স্লোগান রচনা ও তার প্রয়োগ কোনওটাই করতে পারে না। অথচ আমরা এক সময় এই জায়গায় সিপিএমকে চ্যালেঞ্জ জানাতাম। আর বর্তমান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হিংস্র রাজনীতির মোকাবিলা করতে ওর পাল্টা আক্রমণ করে আখেরে লাভের চাইতে ক্ষতিই বেশি হয়। এরজন্য অন্য কৌশল অবলম্বন করে সংগঠন তৈরি করতে হবে। এর জন্য বিস্তারিত আলোচনা এই পরিসরে সম্ভব নয়। আবারও বলব, মিথ্যা বুথ কমিটি গঠন ও কেবল সোস্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করে আর যাই হোক সংগঠন হয় না। আর তল্পিবাহক চিহ্নিত করতে হবে। কেউ আরএসএস-এর কাছে, কেউ শুভেন্দু অধিকারীর কাছে গিয়ে ধুনো দিয়ে পদ ও টাকা কামানোর জন্য সফলতা লাভ করে। এই জন্যই জেলায় জেলায় প্রভাকর পণ্ডিত, নিলু সামন্তদের বাড়বাড়ন্ত। আর রাজ্যে অমিতাভ চক্রবর্তীর পরিবর্তন অত্যন্ত জরুরি। বিধান করকে নিয়ে আসা দরকার। আর রাজ্য সভাপতি হিসেবে শমীক ভট্টাচার্যের কথা বিবেচনা করা উচিত। জেলায় জেলায় বসে থাকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কর্মী আছে, তাদেরকে কাজে ফিরিয়ে আনতে হবে। এরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে কেবল পদ না পেয়ে বিদ্রোহীদের জন্য কারও কোনও আগ্রহ নেই।
লেখক প্রাক্তন বিজেপি নেতা। মতামত ব্যক্তিগত।