শঙ্কর মণ্ডল, ২ অক্টোবর: সাধারণ মানুষের রাজঘাটে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলনের নামে তৃণমূলের নাটক দেখলেন সারা দেশের মানুষ। সেই সঙ্গে এই রাজ্যের বিরোধী আন্দোলনের ওপর রাজ্য পুলিশের ব্যবহার কেমন লাগে, তার অতি সামান্যই অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে সক্ষম হলেন বর্তমান যুবরাজ সহ তথাকথিত তৃণমূল নেতারা। কারণ এদের কারোরই বিরোধী আন্দোলনের কোনও অভিজ্ঞতা নেই। আর দিল্লির মাটিতেও ঐ মিথ্যা ভাষণ কারা শুনতে চাইছেন, সেটাই জানতে ইচ্ছা করছে! কেন্দ্রীয় নেতারা যে তথ্য পেশ করেছেন, সেটাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে না গিয়ে কেন এত ফুটানি? রাজনীতি করার জন্য একটা সীমারেখা থাকা দরকার। আর আজকের দিনটাকেই শাসক বিরোধী দুই দলই রাজনৈতিক তরজার খামতি দিলেন না। তাই দিল্লি ও কলকাতা, দুই শহরেই আজ গান্ধীর জীবন চর্চার চাইতে রাজনীতিই প্রাধান্য পেল।
যদিও আজকের দিনটিকে নিয়ে আমার কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এক অজানা কারণে ১৯০৫ সালে যাকে নিয়ে এসে সবচেয়ে বড় নেতা বানানো হয়েছিল, তাঁর চাইতেও আজকের দিনটি আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হল ভারতের প্রথম দেশপ্রেমিক প্রধানমন্ত্রী ও বলা ভালো কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্রের কাছে শহীদ কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করা লালবাহাদুর শাস্ত্রী। তিনিই স্লোগান দিয়েছিলেন, জয় জওয়ান, জয় কিষাণ। অর্থাৎ কৃষক ছাড়া এই দেশের পক্ষে জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লাভ সম্ভব নয়।
আর একটি বিষয় মনে করিয়ে দিতে চাই, সেটা হল সারা পৃথিবীতে যারা জিনিয়াস হিসেবে পরিচিত হয়েছেন, তাঁদের ৯০ শতাংশই জন্ম নিয়েছিলেন গরীব পরিবারে। লাল বাহাদুর শাস্ত্রীও তাই ছিলেন। কিন্তু গরীব মানুষ হওয়ার জন্য বঞ্চনা সকলকেই ভোগ করতে হয়েছে। তাই আজ যত বেশি লক্ষ লক্ষ বছরের পুরনো জাতির জনক বানাতে ১৫০ বছর আগে জন্ম নেওয়া একজনকে নিয়ে যতটা তৎপর, আমরা ঠিক ততটাই তৎপর লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর ইতিহাস ভুলিয়ে দিতে। এটাও ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর মৃত্যু রহস্য উদঘাটন বা নেতাজির অন্তর্ধান রহস্যের মতোই রহস্যময়।
ফিরে আসি বর্তমান বঙ্গ রাজনীতিতে। মানুষের কাছে এই মুহূর্তে প্রয়োজন পরিত্রাতা হিসেবে উঠে আসা রাজনৈতিক নেতৃত্ব। ভোট অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ তার মাধ্যমেই রাষ্ট্র ক্ষমতা পাওয়া যায়। গণতন্ত্রে যেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সঠিক বিশ্বাসযোগ্যতা বা সততা ছাড়া বাংলার মানুষের কাছে কোনও নিরাপদ ভবিষ্যৎ নেই। আর এই রাজ্যের আর একটি বড়ো বিপদ হল এই মাটিকে জেহাদীরা তাদের গবেষণাগার বলে মনে করে। বোমা শিল্পের রমরমা থেকে শুরু করে অনুপ্রবেশ এবং বিদেশী শক্তির মদতপুষ্ট তৃণমূল ও কমিউনিস্টরা তো আছেই, সেই সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে আর একটি শক্তি, সেটা হল আইএসএফ।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: লেখক সংযুক্ত হিন্দু ফ্রন্টের সভাপতি। এই প্রবন্ধে সমস্ত মতামত তাঁর ব্যক্তিগত।
next post
