29 C
Kolkata
August 2, 2025
উত্তর সম্পাদকীয়

রাজ্যের শাসক দলের আন্দোলনের নামে গ্যালারি শো

শঙ্কর মণ্ডল: মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত তিন শিশুর বাবা প্রকাশ্যে ক্যামেরার সামনে বলছেন যে, তাঁদের দিল্লি যাওয়ার কোনও ইচ্ছা নেই। তথাপি তাঁদের একপ্রকার জোর করেই দিল্লি নিয়ে গিয়ে নাটক করতে চাইছে, ভারতের এক নম্বর লুম্পেন। আর সেই কাজকে নিয়ে মিথ্যার বেসাতি করতে রাজনৈতিক দল পরিচয় দিয়ে রাজনীতি নামকে কলুষিত করল এই রাজ্যের শাসক, ব্যানার্জী প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি।

গতকাল ও আজ দিল্লির মাটিতে এই রাজ্যের শাসক দলের সব কটা মন্ত্রী, সাংসদ ও বিধায়ক উপস্থিত থাকবেন। আর এই সময় রাজ্য সরকারের নানারকম আপদ-বিপদ থেকে রাজ্যকে দেখভাল করবে কে? রাজ্যের শাসক দলের এই আন্দোলনের নামে গ্যালারি শো, আর বিজেপি নেতাদের পক্ষ থেকে আমরা ফোন করলেই টাকা চলে আসবে জাতীয় আলটপকা কথা দুটোই বাংলার বিশুদ্ধ রাজনীতির জন্য অত্যন্ত খারাপ বিজ্ঞাপন।

যদিও এই মুহূর্তে বাংলায় এখন আর কোনও গর্ব করার মতো রাজনৈতিক নেতা কোনও দলেই টিকে নেই। কয়েকদিন আগেই ২৫ শে সেপ্টেম্বর এই রাজ্যের মাটিতে পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্মদিন পালন করেন কিছু রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীরা। কিন্তু তাঁদের এক শতাংশও যদি ওনার জীবনদর্শন নিয়ে পড়াশোনা করতেন ও তাঁকে নিজেদের অনুসরণীয় করতেন, তাহলেও আমি আমার এই প্রতিবেদন লেখার সাহস পেতাম না।

বাংলা আর ক’দিন পরেই উৎসবের মধ্যে প্রবেশ করবে। ডেঙ্গুর হাত থেকে মুক্তির জন্য এই রাজ্যের সরকার কেবলমাত্র মানুষের সচেতনতাকেই দায়ী করে হাত ধুয়ে ফেলতে চাইছে। চুরি যাওয়া শিক্ষা ব্যবস্থার মতোই এই রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থারও মৃত্যু ঘটেছে। জীবনানন্দ জীবিত থাকলে জানিনা উনি এখনও বলতেন কিনা, “আমি বাংলার মুখ দেখিয়াছি, তাই পৃথিবীর মুখ দেখিতে চাহি না আর…।”

এই বাংলা বহু কবি, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী, স্বাধীনতা সংগ্রামীর মতো বহু রাজনৈতিক নেতাদেরও জন্ম দিয়েছে। কলকাতার হাওড়া স্টেশন, শিয়ালদহ স্টেশন থেকে শুরু করে শহীদ মিনার, ধর্মতলা, বিবাদীবাগ বহু রাজনৈতিক আন্দোলনের স্বাক্ষী। বহু দল ও নেতাদের উত্থান পতন দেখেছে। কিন্তু তারাও আজ এত নিম্নমানের নেতাদের আন্দোলন দেখেনি। দীর্ঘ বিষাক্ত কমিউনিস্ট আন্দোলন ও তাদের শাসনের ফলে আজ বাংলার মানুষের মননশীলতা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেসের প্রতি মানুষের বড় অংশ চিরকালই ঘৃণা দেখিয়েছে। বাংলার মানুষের হৃদয়ে গান্ধী নেই, আছে নেতাজি। যদিও ফরোয়ার্ড ব্লক নেতাজীর প্রতীক নয়।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: লেখক সংযুক্ত হিন্দু ফ্রন্টের সভাপতি। এই প্রবন্ধে সমস্ত মতামত তাঁর ব্যক্তিগত।

Related posts

Leave a Comment