সংবাদ কলকাতা, ১৯ সেপ্টেম্বর: শহরের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করতে করেছে কলকাতা পুরসভা। পুরসভার সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীর আগামী দুই মাস ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি পুজো কমিটিগুলোকে বিধিসিম্মত সতর্কীকরণ নোটিশ পাঠাচ্ছে কলকাতা পুরসভা।
আর কদিন পরেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। অক্টোবর ও নভেম্বর এই দুই মাস ধরেই উৎসবের মরসুম চলবে। এরই মধ্যে মশা বাহিত রোগ ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার বাড়বাড়ন্তে বিপাকে পড়েছে কলকাতা পুরসভা। এই অবস্থায় শহরের মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়াকে নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। সেই সঙ্গেই শহরের সব পুজো কমিটি গুলোকে নোটিশ পাঠানো হচ্ছে পুরসভার তরফে।
এদিন কলকাতা পুরোসভার ডেপুটি মেয়র তথা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান অতীন ঘোষ, কলকাতা পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত রায় চৌধুরী ও কলকাতা পুরসভার চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ১৬ টি বোরো হেলথ এক্সিকিউটিভ অফিসারদের এক সঙ্গে বৈঠক হয়। এই বৈঠকের ডেঙ্গু দমনে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিন কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র ও স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, উৎসবের মরশুমে অর্থাৎ আগামী দুই মাস অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে কলকাতা পুরসভার সমস্ত স্বাস্থ্য কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। মশাবাহিত সংক্রমণ দমন করতে ড্রোন এর মাধ্যমে স্প্রে করা হবে। ডেঙু মশা দমনে মশার আঁতুড়ঘর গুলিকে চিহ্নিত করে সেগুলি দমন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই বাড়িতে ভেকট্রার কন্ট্রোল কর্মীদের নিয়ে পৌঁছাতে হবে। বাড়ি ও এলাকায় ডেঙ্গি মশা দমনে অভিযান চালাতে হবে। যদি কোন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত এলাকায় না যায় বা সময় মতো রিপোর্ট না দেয় তাহলে তাঁকে শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। অতীন ঘোষ আরও জানান শহরে এই মুহূর্তে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড কামারডাঙ্গা রেল কোয়াটারের অবস্থা খুব খারাপ। এ ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হবে। যাদবপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা খারাপ। মেডিকেল কলেজগুলির অবস্থা শোচনীয়। চলতি সপ্তাহে তিনি নিজেই সেই সব এলাকায় পরিদর্শনে যাবেন। এবছর সব থেকে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে বোরো-১০ এর ৮১ নং ওয়ার্ড, বোরো-১৩ এর ১১৮ নং ওয়ার্ড এবং বোরো-১ এর ৬ নং ওয়ার্ড।
পুরসভার রিপোর্ট অনুযায়ী এও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা জানুয়ারী মাস থেকে এখন পর্যন্ত ২৭০০ ছাড়িয়েছে। গতবছর ডেঙ্গি আক্রান্তের সংক্রান্ত ছিল ২৪০০।
পাশাপাশি কলকাতার সমস্ত পুজো কমিটিদের পুরসভার তরফে পাঠানো হচ্ছে সতর্কীকরণ নোটিস। প্যান্ডেল তৈরীর জন্য খোলা গর্তগুলিতে বালি দিয়ে বন্ধ করে দিতে হবে। বাঁশের মুখগুলি বালি দিয়ে বন্ধ করে দিতে হবে। প্যান্ডেলের চারপাশে কোথাও জল বা আবর্জনা যাতে না জমে সেদিকে নজর রাখতে হবে। অর্থাৎ, সামনে পুজো আর সেই পুজোর সময় যে মণ্ডপ তৈরী করা হবে, তাতে যে বাঁশ ব্যবহার করা হবে তার মাথায় যেন বৃষ্টি হলে কোনোরকম ভাবে জল না জমে যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে।
