31 C
Kolkata
August 2, 2025
উত্তর সম্পাদকীয় রাজ্য

পঞ্চায়েত নির্বাচন কি বন্ধ করতে চাইছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন?

সুভাষ পাল, সংবাদ কলকাতা, ২২ জুন: গতকাল কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে আদালত অবমাননার জন্য চরম ভর্ৎসনা করা হয়। ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাহিনী চেয়ে কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি। পাশাপাশি রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়, হয় শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন করুন, অথবা দায়িত্ব নিতে না পারলে পদ ছাড়ুন। এরপর রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগপত্র সই না করেই ফেরত পাঠিয়ে দেন। এই ঘটনার পর রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদে রাজীব সিনহার অস্তিত্ব নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সূত্রের খবর, রাজীব সিনহাকে সরিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদে অন্য কাউকে বসানো হতে পারে। রাজ্যবাসীর মনেও নানা প্রশ্ন, কেউ বলছেন কখন পদত্যাগ করছেন এই অবাধ্য নির্বাচন কমিশনার? তাঁর জায়গায় কাকে বসানো হতে পারে? যদিও আজ সাংবাদিকরা তাঁর পদত্যাগ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। তাঁর কাছে এরকম কোনও খবর নেই।

এদিকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে আজ বিভিন্নভাবে সংশয় প্রকাশ করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের আর এক বিচারপতি অমৃতা সিনহা। গতকাল তিনি উলুবেড়িয়ার দুইজন প্রার্থীর নমিনেশনের নথি পরিবর্তন নিয়ে সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আজ তিনি জানতে চান, পঞ্চায়েত নির্বাচন হচ্ছে কি হচ্ছে না?

জানা গিয়েছে, গতকাল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইতে কেন্দ্র সরকারের কাছে চিঠি পাঠাতে বলা হলেও এখনও পর্যন্ত সেই ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ নেয়নি কমিশন। ফলে রাজ্য বিজেপি-র অনেকের ধারণা হয়েছে, রাজ্য নির্বাচন কমিশন কোনওভাবেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন করতে চায় না। সূত্রের খবর, রাজ্য এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন এরকম এক সাংবিধানিক সক্রিয়তার হাত থেকে বাঁচতে এই পঞ্চায়েত নির্বাচন আপাততঃ বন্ধ করে দিতে চাইছে। কারণ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন হলে শাসকদল তৃণমূলের ভরাডুবি অনিবার্য। সম্পূর্ণ অন্তঃসারশূণ্য প্রমাণিত হবে অভিষেকের নবজোয়ার।

রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে যদি শাসকদল তৃণমূলের একবার ভরাডুবি হয়, তাহলে শাসকদলের পায়ের তলার মাটি সরে যাবে। ফলে রাজ্যে ক্ষমতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে। কারণ, পঞ্চায়েত স্তর থেকে শাসকদলের পায়ের তলার মাটি একবার সরে গেলে আগামী লোকসভা ও বিধাসভায় অধিকাংশ আসনে পরাজয় অনিবার্য। এমনকি পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই শাসকদলের অধিকাংশ বিধায়ক তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি শিবিরে ভিড়ে যেতে পারেন। সেটা হলে বিধানসভায় সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ও পতন একযোগে দেখতে হবে।

Related posts

Leave a Comment