শঙ্কর মণ্ডল: রাজনৈতিক নেতারা টেলিভিশনে ভেসে থাকার জন্য অশালীন বক্তব্য বা অসভ্যের মতো কথা বলে। ভারতের মতো বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এটিকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসাবে গণ্য করার জন্য উপযুক্ত আইন প্রণয়ন হওয়া দরকার। বাংলার রাজনীতিতে মদন মিত্র একটি অসভ্য ও বর্বর মানুষ হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত। তার একাধিক নোংরা রাজনীতি আমরা দেখেছি। মেয়ের বয়সী মহিলা নিয়ে যেরকম ইঙ্গিতপূর্ণ ছবি পোষ্ট করেন, তাতে যেকোনও ভদ্র মানুষই লজ্জা পাবেন। সেই সঙ্গে একাধিক হুমকিপূর্ণ বক্তব্যও আছে।
সম্প্রতি ওইরকম বিরোধীশূণ্য নির্বাচনের যে প্ররোচনামূলক বক্তব্য পেশ করেছেন, তাতে এই মুহূর্তে ওকে গ্রেফতার করা উচিত। এব্যাপারে দিলীপ ঘোষের বক্তব্যও সমর্থনযোগ্য নয়।এমনিতেই রাজীব সিনহা, যার একটি মুখ্যমন্ত্রীর ভাইয়ের সাথে মদ খাওয়ার ছবি সোস্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাতে ওঁকে যে অসৎ উদ্দেশ্যে তৃণমূল নির্বাচন কমিশনারের দ্বায়িত্বে নিয়ে এসেছে, সেটা বলাই যায়। আর তাছাড়া দ্বায়িত্ব পাবার একদিনের মাথাতেই পশ্চিমবঙ্গের এই বৃহৎ নির্বাচন ঘোষণা করে দিলেন। একদিনেই নির্বাচন করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিলেন। উপযুক্ত প্রস্তুতি না থাকা স্বত্বেও নমিনেশনের দিন অতি কম সময়ের মধ্যে ধার্য্য করলেন।
সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত হল রাজ্য পুলিশকে দিয়ে নির্বাচনের কাজ সম্পন্ন করার ঘোষণা। কারণ, এই মুহূর্তে রাজ্যে মাত্র ৭০ হাজার পুলিশ আছে। আর এই সব পুলিশকেও যদি কাজে লাগানো হয়, তাহলেও সব বুথে পুলিশ দেওয়া সম্ভব হবে না। যদিও শহরের সব থানা ফাঁকা করে সব পুলিশকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, দিদির নিজস্ব অবৈজ্ঞানিক, বেআইনি সিভিক পুলিশকে নির্বাচনে কাজে লাগানো যাবে না। সুতরাং এই সিদ্ধান্ত থেকে রাজীব সিনহা মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী, এই রাজ্যে ব্যাপক মৃত্যু ঘটাতে চাইছে বলেই মনে হয়। এমনিতেই এই রাজ্যে অবৈধ বোমা শিল্প দীর্ঘ বছরের পর বছর ধরে রমরমিয়ে চলছে।
পূর্বে বাম সরকার ও বর্তমান তৃণমূল সরকার কেউই এই বোমা শিল্পের সমাধি চায়নি। বরং নিজেদের প্রয়োজনে বিশেষ করে নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করতে এই শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের ব্যবহার করতে কেউ ভুল করে না। সিপিএম আমলে যেমন এই বোমা মারার লোকেদের সংরক্ষণ করত, ঠিক আজকেও তৃণমূল তাই করছে। আর এই কাজে বেশিরভাগ যাঁরা পারদর্শী, তাঁদের নিয়েই একটি গভীর ষড়যন্ত্র সম্পর্কে অবগত হওয়া অত্যন্ত জরুরী।রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল, আছে। কিন্তু কোনওভাবেই তাঁকে থাকতে দেওয়া যাবে না। আমি বারবার একটা কথা মনে করিয়ে দিই। আসলে এই রাজ্যকে জেহাদীরা গবেষণাগারে পরিণত করেছে। তৃণমূল তাঁকে লালিত পালিত করছে।
আর রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল ভাড়াটে সৈন্যদের সেনাপতি বানিয়ে আদর্শগত সেনাবাহিনীদের দূরে সরিয়ে রেখে যে অযোগ্যতার পরিচয় বহন করে চলেছে, তা থেকে এই ভয়ঙ্কর তৃণমূলকে প্রতিহত করা শুধু কঠিনই নয়, বরং অসম্ভব। সেই সঙ্গে আর একটি বিষয় অত্যন্ত আশঙ্কার, সেটা হল প্রধান বিরোধী দলের এই ব্যর্থতার সুযোগে ক্রমশ আর একটি জেহাদীদের মদতদাতা দল সিপিএম শক্তিশালী হয়ে না যায়। তার সঙ্গে আইএসএফও নিজেদের এজেণ্ডাকে আড়ালে রেখে সেকুলার জামা পরে মানুষকে বোকা বানাতে চেষ্টা করছে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: লেখক সংযুক্ত হিন্দুফ্রন্টের সভাপতি। প্রবন্ধের সমস্ত মতামত তাঁর ব্যক্তিগত।
previous post