কৃষ্ণনগর, ৩০ শে এপ্রিল: আজ শেষ হল ‘ভারতীয় কিষাণ সংঘ‘-এর ‘প্রান্ত যোজনা বৈঠক-২০২৩‘। গতকাল বিকেল ৪টে থেকে কৃষ্ণনগর ‘সরস্বতী শিশু মন্দির‘-এ শুরু হয়েছিল এই বৈঠক। পশ্চিমবঙ্গে কিষাণ সংঘের ১৭টি সাংগঠনিক জেলা থেকে কার্যকর্তারা এই বৈঠকে যোগদান করেছিলেন। এই বৈঠকে বিশেষভাবে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় কিষাণ সংঘের অখিল ভারতীয় সহ-সংগঠন সম্পাদক গজেন্দ্র সিং, পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ক্ষেত্রের সংগঠন সম্পাদক শ্রীনিবাস ও অখিল ভারতীয় কার্যকারিণী সদস্য ও পশ্চিমবঙ্গ প্রান্তের সভাপতি কল্যাণ কুমার মন্ডল এবং প্রান্তের সংগঠন সম্পাদক অনিল চন্দ্র রায়।
২৯ তারিখ শুরুতে কিষাণ সংঘের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে বৈঠক শুরু হয়। পতাকা উত্তোলন করেন সভাপতি কল্যাণ কুমার মন্ডল। উপস্থিত কার্যকর্তাদের সমবেত ‘জয় কিষাণ, জয় বলরাম, ভারত মাতা কি জয়’ ধ্বনির মাধ্যমে স্কুল চত্ত্বর প্রতিধ্বনিত হতে থাকে।
কিষাণ সংঘ কী? কেন কিষাণ সংঘ করা উচিত! উপস্থিত কার্যকর্তাদের সে বিষয়ে সুন্দরভাবে বুঝিয়ে বলেন শ্রী মন্ডল। কীভাবে সংগঠন বাড়ানো যায়, সেই বিষয়েও তিনি মতামত দেন।
তারপর বক্তব্য রাখেন গজেন্দ্র সিং। তিনি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় গত ১৯ শে এপ্রিল থেকে প্রবাসে গিয়ে কৃষি ও কৃষকদের সমস্যা সম্পর্কে জেনেছেন বলে জানান। এই সমস্ত সমস্যা সমাধানের একটাই উপায়, কৃষকদের সংঘবদ্ধ করা। কৃষকরা সংঘবদ্ধ হলে তবেই তারা তাদের ফসলের উপযুক্ত মূল্য ও প্রাপ্য সম্মান ফিরে পাবে বলেও জানান তিনি।
৩০ তারিখ-এর শুরুতেই প্রান্তের কার্যকর্তাদের নিয়ে বৈঠক হয়। বৈঠকে সংগঠন দ্রুত বৃদ্ধি করার বিষয়ে সকলেই মতামত প্রদান করেন।
এরপর ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ‘সদস্যতা অভিযান’ শুরু করার সার্বিক পরিকল্পনার কথা জানান সংগঠন সম্পাদক শ্রী রায়। ‘সদস্যতা অভিযান প্রমুখ’ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রান্তের সহ-সভাপতি আশিস সরকার-কে। কমপক্ষে ৭০ হাজার সদস্য করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। ধীরে ধীরে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি গ্রামে গ্রামে ভারতীয় কিষাণ সংঘ পৌঁছে যাবে বলেও দিশা দেখান তিনি।
এই যোজনা বৈঠকে সংগঠনের আয়-ব্যয়ের তথ্য তুলে ধরেন প্রান্ত কোষাধ্যক্ষ পঙ্কজ বন্ধু। কিষাণ সংঘের মুখপত্র ‘ভারতীয় কিষাণ বার্তা’র সম্পাদক মিলন খামারিয়া – এই পত্রিকা প্রতিটি কৃষকের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবার আবেদন জানান।
এই যোজনা বৈঠকর গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে সভাপতি কল্যাণ কুমার মন্ডল বলেন -” ভারতীয় কিষাণ সংঘ কৃষকদের লাভকারী মূল্য পাইয়ে দেবার জন্য বদ্ধপরিকর। কৃষকরা সংঘবদ্ধ হলে তবেই তারা নিজেদের লাভকারী মূল্য ও সব অধিকার ফিরে পাবে। পাশাপাশি জৈবিক কৃষিকে ফিরিয়ে আনতে চাই আমরা।”
এই যোজনা বৈঠক থেকে এই বছরের শেষ দিকে নভেম্বর মাসে – কৃষকদের উৎপাদিত ফসলের লাভকারী মূল্যের দাবিতে, যথাযথ সেচ ব্যবস্থা ও স্বল্প মূল্যে বিদ্যুৎ প্রদানের দাবিতে – কলকাতায় ধর্ণা প্রদর্শন ও রাজ্যপালকে ডেপুটেশন দেওয়া হবে বলেও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এই যোজনা বৈঠকের আয়োজক ছিল নদিয়া জেলা সমিতি। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে উপস্থিত কার্যকর্তাদের থাকা-খাওয়া-বিশ্রাম ও অন্যান্য বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন মৃন্ময় বিশ্বাস, দেবাশিস দাস, নির্মল বিশ্বাস, অশোক বিশ্বাস ও পরিমল বিশ্বাস।
next post
